Courtesy Meghnath Bagchi
ইসলামিস্টদের খুশি করতে কমিউনিস্টরা যখন তসলিমাকে তাড়িয়ে দিল তখনও বঙ্গআঁতেলশিরমণি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বেঁচে। বঙ্গসংস্কৃতির এই আনন্দ-ঘোষিত যুগপুরুষ ফিসফিস করে কিছু বলেছিলেন কিনা জানি না, তবে প্রকাশ্যে শাসকের পাশেই ছিলেন। শঙ্খ ঘোষ জ্বলজ্বল করছিলেন, সদ্যপ্রয়াত নবনীতা দেবসেন ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, সুবোধ যথারীতি গোমাংস খাচ্ছিলেন, শ্রীজাত আবৃত-কাব্য লিখছিলেন, শুভাপ্রসন্ন বায়সচিত্র আঁকছিলেন, তৃণ থেকে বটবৃক্ষ - সব মাপের কবি সাহিত্যিক নন্দন মুখরিত করছিলেন। জেএনইউতে মুক্তচিন্তার কমিউনিস্টরা বিপ্লব করছিলেন। যাদবপুর প্রেসিডেন্সি সর্বত্র বাকস্বাধীনতার সংগ্রাম চলছিল।
তবু তসলিমাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারণ কি? তিনি ইসলামের বিরোধীতা করেছিলেন। তিনি হিন্দুরও বিরোধীতা করেছিলেন, কিন্তু তার জন্য তাঁর মৌখিক সমালোচনার বাইরে কোনো কিছু সহ্য করতে হয়নি। সহি বাঙ্গালীর দেশ বাংলাদেশের কথা ছেড়ে দিন, ৩০% মুসলিমের রাজ্য (তখন আরো কম ছিল) পশ্চিমবঙ্গেও তাঁর ভাগ্যে জুটেছিল মৃত্যুদন্ডের ফতোয়া। আজকের তৃণমূল নেতা ইদ্রিশ আলি থেকে শুরু করে বর্তমান গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, সবাই তখন এককাট্টা। একের পর এক মৌলবী তসলিমার মাথার দাম ধার্য করছিল। মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ অবরোধ করল দুধেল গাইরা। "সংস্কৃতির শহর" কলকাতা হয়ে উঠল ইরাক বা সিরিয়া বা আফগানিস্তানের জঙ্গী-শহর। রাস্তায় সেনাবাহিনীর রুটমার্চ, সাঁজোয়ার চলাচল... এই নাকি কলকাতা!
সংস্কৃতির শেষ কথা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। নবরত্ন সভার প্রাণপুরুষ তথা পৃষ্ঠপোষক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কর্তব্য স্থির করতে বিলম্ব করেননি।
নির্বাসিত তসলিমা নাসরিন।
কোনো বরাহনন্দন সেদিন ঘোঁতঘোঁত করেনি।
#সুপ্রিয়
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................