বৈবাষত্ব মনু বংশ

“বৈবাষত্ব মনু বংশ”

বৈবাষত্ব মনু থেকে আমরা দুটি বিখ্যাত বংশের হদিস পাই। এক, ঈক্ষাকু বংশ, দুই- যযাতির বংশ। 

‘ইক্ষাকু বংশ’= প্রথম রাজা ‘নিমি’। নিমি বর্তমান নেপালের ‘বিদেহ’ অঞ্চলে তার রাজত্ব স্থাপন করেন। পুরানে এই নিমি রাজার কাহিনী আছে স্ববিস্তারে। 

নিমির পুত্র ‘মিথি’ যিনি মিথিলাতে তার রাজধানী স্থাপন করেন। তার পুত্র রাজা বা রাজর্ষি জনক। তার রাজধানী জনক পুরী, নেপালে। তার পরবর্তি সব রাজাকেই বলা হয় রাজা জনক। এই বংশের এক রাজা “শিরধ্ব”। তার পুত্রী মা সীতা। 
 
নিমি রাজার অন্য পিড়ি ‘কুস্কি’, সেই বংশে রাজা ‘অরন্যান্য’। এই রাজা অরন্যান্য র নাম মনে রাখবেন। কারন, তার সময়ের কথা একটু বিস্তারিত লিখতে হবে। এই সময় থেকে ই আমাদের অনেক জানা কাহিনী শুরু হয়েছে। তাই ‘রাজা অরন্যান্য’ এর নাম মনে রাখা খুব প্রয়োজন। 

“যযাতির বংশ”

এবারে আসুন যযাতির বংশ ধারায়। যযাতির পুর্ব পুরুষ শুরু হয় ‘বৈবষত্ব মনুর” এক কন্য ‘ইলা’ থেকে। ঈলা ছিলেন এক বিদুষী মহিলা এবং সাধিকা। তার সঙ্গে বিয়ে হয় বুদ্ধ মুনির (গৌতম বুদ্ধ নন)। তাদের সন্তান পুরুরবা। তিনি এক মহান রাজা ছিলেন যার কথা পুরানে লিখিত আছে। তিনি প্রতিষ্ঠান নামে শহরের প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানের বর্তমান নাম “পৈঠান”। আজো আছে। 

এই পুরুরবার এক গোষ্টি বর্তমান উজবেকিস্তান,যার নাম বাহ্লীক প্রদেশ এবং রাজধানী ‘তাসখন্দ’, সেই অঞ্চলে রাজত্ব স্থাপন করেন। এদের নিয়ে আর বিশেষ কিছু লেখা নেই পুরানে। তবে আমরা দেখতে পাই, শ্রী রামের ভাই ভরতের বড়ো ছেলে তক্ষক এই অঞ্চল শাসন করতেন। 

যযাতির কথায় আসার আগে, একটু রাজা অমাবসুর কথা জেনে নেবো।
পুরুরবার এক ছেলে ‘আয়ু’ যিনি প্রতিষ্ঠানের (পৈঠান) এর শাসক ছিলেন। পুরুরবার অন্য পুত্র ‘অমাবসু’ বর্তমান ‘কানপুর’ যার প্রাচীন নাম “কান্যকুব্জ’ সেই অঞ্চলের শাসক ছিলেন। 

এই অমাবসুর বংশে পাই ‘ ঋষি জনহু’। যিনি মা গঙ্গাকে হিমালয় থেকে এনে তার রাজত্বে গঙ্গাকে আট ভাগে ভাগ করেন। এই জনহুর বংশে মুনি বিশ্বামিত্র , কন্যা সত্যবতী ( মহাভারতের সত্যবতী নন) এবং মুনি বশিষ্ট। 

আমি জানি অনেকেই প্রতিবাদ করবেন এবং বলবেন মা গঙ্গাকে হিমালয় থেকে সাগরে আনেন্ রাজা ভগীরথ। আবার সেই কাহিনীতেই আছে মুনি জনহু মা গঙ্গাকে তার আশ্রমে লুকিয়ে রাখেন এবং পরে তার হাটু চিরে আট ভাগ করে ছেড়ে দেন। কিন্তু মুশকিল হলো, রাজা ভগীরথ রাজা হরিশ্চন্দ্রের পুত্র সগর এর বংশধর। আর রাজা হরিশ চন্দ্রকেই পুরানে পাই কাশীর গঙ্গা তীরে এক ‘মড়া পোড়ানোর’ কাজ করতে। তাহলে গঙ্গা সেই সময় কাশী অবধি ছিলেন। ভগীরথ তো তখন জন্মই নেন নি। আমরা ভাগীরথী বলে যে নদীকে জানি, যা কলকাতার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে, সেই ভাগীরথী নদী মনে হয় উত্তর থেকে দক্ষিনে রাজা ভগীরথ আনেন। সেক্ষেত্রে জনহু মুনির কাহিনীই সত্য বলে ধরে নিতে হয়। সেটাই এই এই বংশ তালিকায় আছে।  

জনহু র পর ‘গাধী’ তারপর বিশ্বামিত্র, সত্যবতী এবং বশিষ্ট। 
*****

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted