বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙ্গার হুমকি দিয়েও চুটিয়ে শীত ভর মহাফিল করে যাওয়া চরমোনাই পীরের প্রতিই ভরসা পাই!

বাংলাদেশে ‘ইজরাইল দুতাবাসে’ আগুন দেয়া আর আল জাজিরা টেলিভিশনকে হম্বিতম্বি দেখানো একই কথা। দুইটাই অবাস্তব ও অসম্ভব। রাস্তায় গিয়ে এই দুইটারে লগি বৈঠা দিয়ে পিটালে লোকে হাসবে। এই দেশে হেফাজতের এক ধমকে যখন সিলেবাস বদলে যায়, ভাস্কর্য রাতদুপুরে সরিয়ে নেয়া হয় তখন প্রোফাইলে “প্রধানমন্ত্রীর লোকজন” ফ্রেম লাগানো দেশপ্রেমিকরাদের আমার সেরকমই লাগছে।
মামুনুলের হুমকির পর এই মুখগুলোই মিনমিন করে ভাস্কর্য আর মূর্তি এক না বলেছিলো। বঙ্গবন্ধুর মূর্তি (মতান্তরে ভাস্কর্য) বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়া হবে- বিশ্রী ভাবভঙ্গি করে চরমোনাই পীরের বক্তব্যের পর ঘর ছেড়ে বের হলেন না কেন? এখন আল জাজিরা টেলিভিশনের ডকু প্রকাশের পর বলছেন, শেখ হাসিনার ভাইরা, সন্তানরা ঘরে বসে থাকবে না, একটা ডাকের আশায় তারা বসে আছে। প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিবেন। ঢাকায় বেড়াতে এসে যারা বডিগার্ড নিয়ে চলেন নিরাপত্তার অভাবে তারাই আল জাজিরা ডকু প্রকাশের পর বলছেন শেখ হাসিনার জন্য তারা বুক পেতে দিবেন!

আমার ফ্রেন্ড লিস্টে এত এত ”প্রধানমন্ত্রীর লোক” থাকার পরও কেন বয়াতি সামসুল হক চিশতিকে মাদ্রাসার ফ্যাতরাখোর হুজুরদের ভয়ে এভাবে হাতজোর করে ক্ষমা চাইতে হয়েছিলো? নাসিরনগর হামলার পর আমার ইনবক্সে ভরে গিয়েছিলো হিন্দুদের আহাজারি! তাদের কেউ নাই! লীগ বলেন বিএনপি সবাই এক। একমন্ত্রী হিন্দুদের বিশ্রীভাবে গালি দিয়েছিলো। সবাই বলল কিছু লিখুন। এখন দেখি হিন্দুরাও এদেশের বিরাট ক্ষমতাশালী লোকজন! তারাও বলছে তারা ”প্রধানমন্ত্রীর লোক”! ভালই হয়েছে। আমার একটা দায় কমে গেলো। এদেশের সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে আমাকে আর লিখতে হবে না! এত ক্ষমতাশালীরা কেমন করে সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়? এমনকি জঙ্গিবাদ ফঙ্গিবাদ নিয়েও কিছু লেখার দরকার নেই। সবই গুজব রটনা। এগুলোর কথা যারা বলে তারা সব আরএসএস র’ বিজেপির এজেন্ট!

এখন আমার মনে হচ্ছে, হুদাই লিখেটিখে সময় নষ্ট করেছি! যথেষ্ঠ হয়েছে। কারণ সবাই দেখছি বাংলাদেশকে স্বপ্নপুরী বলছে! তাহলে কেন মিছিমিছি এতসব লিখে মানুষের শত্রু হলাম? ধর্মের নবী প্রভূদের যতখানি বিপদজনক ভেবেছিলাম তারচাইতে কম কিসে রাজনীতির নবী প্রভূদের ভক্ত আশেকানরা? আমার দু:খ একটাই, ফেইসবুকে দুটো কথা লিখতে যারা জেলে যাবার ভয়ে ভীত তারাও এখন বলছে আল জাজিরা বাংলাদেশকে ’হেয় করেছে’! এখন তারাও প্রধানমন্ত্রীর লোক! তাহলে এদেশের সত্যিকারের সংখ্যালঘু তাহলে এই বয়াতীরা? নাস্তিক ব্লগাররা? মামুনুল হকদের ভয়ে যারা গর্তের লুকিয়ে থাকে তারাও ”প্রধানমন্ত্রীর লোক” হলে প্রধানমন্ত্রী ঠিকই বুঝতে পারেন তার লোকদের উপর ভরসা করে থাকলে আর হেফাজতের দাবী উনাকে মানতে হত না। প্রবাসী ছাগু ফাইটাররা ঢাকায় বেড়াতে আসলে বডিগার্ড নিয়ে চলতে দেখলে আর যাই হোক উনাদের আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে পারি না। তাই শেখের বেটির জন্য দুঃশ্চিন্তাই থেকে গেলো। বরং বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙ্গার হুমকি দিয়েও চুটিয়ে শীত ভর মহাফিল করে যাওয়া চরমোনাই পীরের প্রতিই ভরসা পাই!

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted