“অস্তিত্ব বজায় রাখার শেষ সুযোগ”
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
আজ যেটা লিখছি , এটা বোধ হয় পশ্চিম বংগের বাঙ্গালীর জন্য শেষ ভবিষ্যত বানী। আমি কোনো জ্যোতিষী নই, ভবিষ্যত দ্রষ্টাও নই। কিন্তু “ঘর পোড়া গরু “ তাই সিদুরে মেঘ দেখলেই ডরাই।
বাংলা এবং বাগালী দের নিয়ে অনেক লিখেছি। অনেকের ভালো লেগেছে। বামপন্থী আতেলদের থেকে গাল ও পেয়েছি।
নদীর এমনকি সমুদ্রের একটি স্রোত থাকে। সেই স্রোত সেই নদীর মুল ধারা। মুল ধারাতে জল থাকে পরিষ্কার । দেখবেন সেই মুল স্রোতের পাশাপাশি দুই দিকে স্রোত উলটো দিকে যায়। ফলে জলের সব ময়লা সেই উল্টোদিকে চলা স্রোতের সঙ্গে চলে।
জাতীয় জীবনেও যে কোনো জাতির একটা মুল ধারা থাকে। মুল ধারাতে চলাই জাতির উন্নতির এক মাত্র উপায়। উল্টো দিকে চললে ময়লা জমে। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স আজ সেই সমস্যায় ভুগছে।
বাঙ্গালী ভারতীয় জাতিয় জীবন বা তার মুল ধারা থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছে সেই ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে। সেটার শুরু হয়েছে মুলত প্রমোদ দাশগুপ্ত এবং জ্যোতি বসুর হাত ধরে। ডাঃ বিধান ছন্দ্র রায় অবধি এবং তার পর প্রফুল্ল সেন অবধি মোটা মুটি ঠিকই ছিলো। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কোনো বিরোধীতা বা অসহযোগিতা ছিলো না। যা যতো টুকু উন্নতি হয়েছে সেই সময় ই হয়েছে যা ভাঙ্গিয়ে আজো আমাদের চলছে। পশ্চিম বংগ তখন দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে ছিলো। আজ ২৪ তম জায়গায় পৌছে গেছি আমরা।
বানপন্থীরা বাঙ্গালীকে ভাগ করলো “আমরা এবং ওরা” তে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতাই তাদের মুল মন্ত্র। তাদের এই বিরোধিতার মধ্যে কোনো যুক্তি গ্রাহ্য যুক্তি না থাকলেও, কেন্দ্রের সব কিছুতেই “না না না, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও, মানবো না মানবো না”, চললো ৩৪ বছরের অপশাসন। শেষ কয়েক বছর তো একেবারে “জঙ্গলের রাজত্ব” অত্যচার অনাচার সইতে না পেরে বাঙ্গালী নিয়ে এলো পরিবর্তন।
ঠিক আড়াই বছরের মধ্যেই ‘অগ্নিকন্যা’ বললেন, ৯৯% কাজ করে ফেলেছি। এই প্রায় দশ বছরে তিনি ‘বামপন্থীদের’ ‘আমরা ওরা থেকে সরে এসে বানালেন এক নতুন ধারা। “আমি তুমি”। প্রচলন করলেন কিছু “বিশুদ্ধ অশালীন কথা বার্তা, যা বাংগালী কোনোদিন ভুলেও প্রকাশ্যে বলতো না। দেশের নির্বাচিত প্রধান মন্ত্রী কে “হরিদাস পাল, কোমরে দড়ি পরিয়ে ঘোরানো থেকে শুরু করে অভিধানে যতোগুলো কটু কথা আছে তার সব উগরে দিলেন। পশ্চিম বংগের বাঙ্গালী ভুলে গেলো ‘গনতন্ত্র ‘ কাকে বলে। শিখলো শুধু ব্যাক্তি ভজা। তার নামে মন্দির বানানোর কথা বললেন তার দলেরই এক সাংসদ । এই দশ বছরের পাগলের রাজত্বের কথা যতো কম বলি ততোই ভালো। সবাই আজ সেটা বুঝতে পারছে শুধু মাত্র কিছু লোক বাদে যারা করে কম্মে খাচ্ছে। এই ‘আমি আজ পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে ‘ভাইপোত্ব”।
সব কিছুতেই কেন্দ্রীয় বিরোধিতা, কেন্দ্রের প্রকল্প গুলোকে নিজের বলে চালানো এখন একটা প্রথা। কেন্দ্র যা বলবে যে সিদ্ধান্ত নেবে তা “না” করাটাই এখন দস্তুর। ৩৪ বছরের জঙ্গলের রাজত্বে এতটা ছিলো না।
কেন্দ্রে বিজেপি সরকার বহাল তবিয়তে। অনেক সিদ্ধান্ত এই গত ৭১ বছরের মধ্যে কোনো সরকার নিতে পেরেনি যা অন্য সরকার নিতেই পারতো।
কিন্তু ‘দেখতে নারি তোর চরন বাকা”, এটাই আজ চরম সত্য।
আমরা চলছি স্রোতের উলটো দিকে। বাঙ্গালীর জাতীয় জীবনে জমেছে প্রচুর ময়লা। কেন্দ্র বিরোধিতা ছেড়ে ভারতের জাতীয় জীবনের মুল স্রোতে না ফিরলে বাঙ্গালী শেষ। যে যাই বলুক “ভারতীয় জনতা পার্টিকে’ সরিয়ে কোনো আঞ্চলিক দল বা তাদের মিলিঝুলি সরকার আগামী ১৫ বছরে দিল্লীর শাসন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। প্রধান মন্ত্রী হবার অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে অনেক কেই মানসিক হতাশায় ভুগতে হবে। সেই সঙ্গে পশ্চিম বংগ হবে জঞ্জালের আস্তাকুড়।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................