সাইফ নামের এক বাংলাদেশীকে স্থানীয়ভাবে বহিস্কার করে ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে ফরাসী কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে ফরাসী পুলিশ চিঠি দিয়ে জানিয়েছে সে ফ্রান্সের জন্য হুমকি কারণ সে আইএসের সঙ্গে জড়িত। বুঝাই যাচ্ছে ফরাসীরা আর সহ্য করবে না। তারা কঠর হচ্ছে। সাইফের বাবা ফ্রান্সের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কি পরিমাণ মুসলিম জাতীয়তাবাদী হতে পারে সেটা বাংলাদেশ এলে সবাই দেখতে পাবে। সাইফের বাবা বাংলাদেশে শিক্ষকতা করেই ফ্রান্সে গিয়েছিলেন। মুসলিম বাড়িতে ছেলেমেয়ে মুসলিম জাতীয়তাবাদের শিক্ষা দেয়া হয়। এটা প্রায় সারা বিশ্বের মুসলিম পরিবারগুলোতেই দেয়া হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্মীয় জাতীয়তাবোধ পরিবার থেকেই পেয়ে থাকে। এই অঞ্চলের হিন্দুরাও হিন্দু জাতীয়তাবোধে দীক্ষা পায় পরিবার থেকেই। কিন্তু সেই জাতীয়তাবোধের রাজনৈতিক চেহারা ইসলামিজমের মত ছিলো না বলেই কখনো সেটা রাষ্ট্রীয় জীবনে ফলাও হয়নি। কিন্তু সমাজিক জীবনে হিন্দু কমিউনিটিতে এটি বড় ধরণের ঐক্যের ব্যাপার! ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে ধর্মীয় চিহ্ন নিষিদ্ধ হওয়ার পর একটি হিন্দু শিক্ষার্থীও হিন্দুত্ব চিহ্ন ধারণ করার চেষ্টা করেনি কারণ জাতীয়তাবোধের রাজনৈতিক আকাঙ্খা তাদের নেই। তাই বলে তারা ‘আমরা হিন্দু জাতি’ এই মনোভাব ত্যাগ করেছে তা নয়। তারাও ফ্রান্সে মন্দির বানায়। সমস্যা হচ্ছে মন্দির গির্জা মসজিদের মত রাজনৈতিক পরিচয় ছড়ায় না। ফরাসীরা বিপ্লব করে গির্জার সেই বিষদাঁত ভেঙ্গে ফেলেছিলো। রাজনৈতিক ধর্মের কারণেই সাইফ নামের বাংলাদেশী যুবক ফ্রান্সের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। সাইফের বাবা মা সন্তানকে আর সব মুসলিম বাবা মায়ের মতই সন্তানকে রাজনৈতিক মুসলমান পরিচয়ের শিক্ষা দিয়েছেন। সাইফের মায়ের বক্তব্য যেটা প্রথম আলোর কাছে তিনি প্রকাশ করেছেন সেখানেও রাজনৈতিক মুসলমানের শিক্ষার প্রমাণ মিলেছে, তিনি বলেছেন, ‘তার ছেলে ষড়যন্ত্রের শিকার’!
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কি পরিমাণ মুসলিম জাতীয়তাবাদী হতে পারে সেটা বাংলাদেশ এলে সবাই দেখতে পাবে। সাইফের বাবা বাংলাদেশে শিক্ষকতা করেই ফ্রান্সে গিয়েছিলেন। মুসলিম বাড়িতে ছেলেমেয়ে মুসলিম জাতীয়তাবাদের শিক্ষা দেয়া হয়। এটা প্রায় সারা বিশ্বের মুসলিম পরিবারগুলোতেই দেয়া হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্মীয় জাতীয়তাবোধ পরিবার থেকেই পেয়ে থাকে। এই অঞ্চলের হিন্দুরাও হিন্দু জাতীয়তাবোধে দীক্ষা পায় পরিবার থেকেই। কিন্তু সেই জাতীয়তাবোধের রাজনৈতিক চেহারা ইসলামিজমের মত ছিলো না বলেই কখনো সেটা রাষ্ট্রীয় জীবনে ফলাও হয়নি। কিন্তু সমাজিক জীবনে হিন্দু কমিউনিটিতে এটি বড় ধরণের ঐক্যের ব্যাপার! ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে ধর্মীয় চিহ্ন নিষিদ্ধ হওয়ার পর একটি হিন্দু শিক্ষার্থীও হিন্দুত্ব চিহ্ন ধারণ করার চেষ্টা করেনি কারণ জাতীয়তাবোধের রাজনৈতিক আকাঙ্খা তাদের নেই। তাই বলে তারা ‘আমরা হিন্দু জাতি’ এই মনোভাব ত্যাগ করেছে তা নয়। তারাও ফ্রান্সে মন্দির বানায়। সমস্যা হচ্ছে মন্দির গির্জা মসজিদের মত রাজনৈতিক পরিচয় ছড়ায় না। ফরাসীরা বিপ্লব করে গির্জার সেই বিষদাঁত ভেঙ্গে ফেলেছিলো। রাজনৈতিক ধর্মের কারণেই সাইফ নামের বাংলাদেশী যুবক ফ্রান্সের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। সাইফের বাবা মা সন্তানকে আর সব মুসলিম বাবা মায়ের মতই সন্তানকে রাজনৈতিক মুসলমান পরিচয়ের শিক্ষা দিয়েছেন। সাইফের মায়ের বক্তব্য যেটা প্রথম আলোর কাছে তিনি প্রকাশ করেছেন সেখানেও রাজনৈতিক মুসলমানের শিক্ষার প্রমাণ মিলেছে, তিনি বলেছেন, ‘তার ছেলে ষড়যন্ত্রের শিকার’!
ইউরোপের প্রতিটি মুসলিম মেয়েই হিজাব নিয়ে এই ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’ হয়েছে! মানে তারা দাবী করেছে। এইসব ষড়যন্ত্র নিপীড়নের ঘটনা পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে দেখে সেগুলোর কোন সত্যিকারের উত্স নেই। তার মানে এরকম কোন ঘটনাই কখনো ঘটেনি তা বলছি না। কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে মুসলিমদের “আমি মুসলিম” এই পরিচয়টি ধর্মীয় তো বটেই, কিন্তু মনে রাখতে হবে এটি তারচেয়ে বড় রাজনৈতিক একটি পরিচয়। যে কারণে শঠতা তথ্য বিকৃতি করতে তারা দ্বিধা করে না। আসামের শিক্ষিত মুসলিম যারা শিক্ষক, কবি, অধ্যাপক তারা ‘মিয়া কবিতা’ নামের এক ধরণের কবিতার সূচনা করেছে যেখানে আসামে তীব্র মুসলিম বিদ্বষ, মুসলিম নিপীড়ন, হত্যা, ধর্ষণের মত শিকার হওয়া মুসলিমের কথা বলে। এই কবিতাগুলো বাস্তব ঘটনা থেকে লেখা বলে মিয়া কবিতার কবিরা দাবী করতে থাকলে আসাম পুলিশ ঘটনাগুলো তদন্ত শুরু করলে দেখা যায় এরকম একটি ঘটনারও বাস্তব কোন প্রমাণ নেই! এরকম শঠতা ঘটেছে কারণ ভারতে মুসলিম পরিচয়টি মুসলিমদের কাছে যতটা না ধর্মীয় ততটাই রাজনৈতিক। ফরাসীসহ ইউরোপ আমেরিকা এশিয়া সর্বত্র মুসলিমরা তাদের রাজনৈতিক ইসলামের হয়ে জাতীয়তাবাদ ধারণ করে। হিন্দুরা মুসলিমদের মত সমান সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় জাতিবোধে আক্রান্ত হয়েও যে কারণে বৃহত্তর কসমোপলিট্রন সমাজে নিজেদের হিন্দুত্ব নিয়ে বসবাস করতে পারছে। অবশ্যই তারা ফরাসী সমাজের অংশ হতে পারেনি। আমেরিকা ইউরোপ কোথাও সেটা হতে পারেনি। কিন্তু রাজনৈতিক রূপ পায় না বলেই তারা অগচোরে থেকে যায়। মুসলিমরাও সেরকম সাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে হিন্দুদের মত অগচোরে থেকে যেত যদি না ইসলামের মধ্যে রাজনৈতিক শর্ত না থাকত।
রাজনৈতিক ইসলামের হাতে আছে শক্তিশালী ‘মুসলিম বিদ্বেষ’ অস্ত্র। এই অস্ত্র দিয়ে ফরাসীদের সারাবিশ্বের কাছে ‘ইসলমাফোবিক’ ‘মুসলিম বিদ্বেষী’ হিসেবে মুসলিমরা পরিচয় করিয়ে দিতে পেরেছে। ফ্যান্সে যখন জ্যাক শিরাক সরকার স্কুলে সব রকম ধর্মীয় চিহ্ন পরে আসা নিষিদ্ধ করল তখন ক্রুশ ইহুদী টুপি কপালে হিন্দুদের দইয়ের ফোটা সবই বন্ধ হয়ে গেলো কোন রকম প্রতিবাদ ছাড়াই। কিন্তু একমাত্র বঞ্চিত আর বিদ্বেষের শিকার হলো মুসলিমরা! হাজার হাজার মুসলিম রাজপথে মিছিল করে বিশ্বকে জানালো তারা ফ্রান্সে বিদ্বেষের শিকার হচ্ছে! বামপন্থিরা উগড়ে দিতে থাকল তাদের পশ্চিমা অন্ধ বিদ্বেষ। মুসলিমরা এই সুযোগে আরো বেশি করে নিজেদের দেশে গোড়ামী বাড়াতে শুরু করল। তাদের বিশ্লেষকরা এই গোড়ামীর জন্য আবার ফরাসীদের মুসলিমদের উপর চাপানো কঠরতাকেই দায়ী করল। চিন্তা করে দেখুন, ফ্রান্স কেবল তাদের দেশের মূল ভিত্তি সেক্যুলারিজমের আদর্শ সমন্নুত রাখতে স্কুলে ধর্মীয় চিহ্ন নিষিদ্ধ করেছিলো। স্কুলের ড্রেস কোডও কিন্তু সমাজের ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে শ্রেণীকক্ষে সমতার পরিবেশ আনার জন্য মান্য করা হয়। ফ্রান্স সেই সমতাই এনেছে স্কুলে। কিন্তু তাতে বিদ্বেষের শিকার হয়েছে শুধু মুসলিমরা!
এই রাজনৈতিক ধর্ম ও তার জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ফ্রান্স যেভাবে কার্যক্রর হচ্ছে সেটাই সভ্য জাতির উদাহরণ। চাইনিজ মলম ফরাসীদের সভ্য সাহিত্য সংগীতময় জাতির পক্ষে সম্ভব না। ফারাসীদের রাজনৈতিক ইসলামের মোকাবেলা তাই অনুপ্রাণিত করবে সামনের দিনগুলোতে অন্যান্য সভ্য দেশগুলোকেও।
#সুষুপ্ত_পাঠক
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................