“আসুরী স্বভাব”
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
শ্রী গীতার অনেক ভাষ্য আছে। অধ্যপক অতুল প্রসাদ সেনের গীতা আমি সব সময় সঙ্গে রাখি। শ্রী জগদীশ ঘোষের গীতা বাবা পড়তেন কিন্তু বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়া নেই । শ্রী অতুল প্রসাদ সেনের গীতা তে বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়া আছে এবং সকলের বোধগম্য হবে।
এবারে গীতা কিনে ( সংষ্কৃত সাহিত্য ভান্ডার ,কলেজ স্ত্রীট) রাজনিতীর আর সেলফির কচ কচানি ছেড়ে ১৬ তম অধ্যায় টা পড়ুন। বুঝুন আমাদের মধ্যে কি ধরনের আসুরী সম্পদ নিয়ে আমরা সমাজে চলা ফেরা করছি আর নিজের আশ পাশ দুষিত করে চলেছি। এর মধ্যে বিশেষ করে পড়ুন ৭ম শ্লোক থেকে ১৮ তম শ্লোক। দেখবেন আমাদের মধ্যেই কি পরিমান আসুরী সম্পদ আছে।
কি সম্পদ আমাদের আছে?-----
১) ধর্মে প্রবৃত্তি নেই। সৎ কর্ম বা কর্তব্য কর্মে কোনো ইচ্ছা নেই।
২) অধার্মিক কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখা আসুরী সম্পদের মালিকেরা কোনো দিন পারে না। অকাজ ( যা কর্তব্য কর্মের মধ্যে পড়ে না) খুব মতি।
৩) আসুরী সম্পদের মালিকেরা শৌচ বা অশৌচ কিছু মানে না ।
৪) মিথ্যা প্রবঞ্চনা ছলনা এদের জীবিকা এবং নিত্য কর্ম।
৫) সদাচার, সত্য কথা, মধুর ব্যাবহার এরা জানে না।
৬) এরা ইশ্বর বা সৃষ্টি কর্তা বলে কিছু আছে তা মানে না।
৭) ধর্ম এদের কাছে সমাজের জঞ্জাল। ধর্মেকে ঝেটিয়ে বিদায় করো।
৮ ) এরা মনে করে স্ত্রী পুরুষের যৌন সংসর্গই সব সৃষ্টির আসল কথা।
৯) যে সব কামনা বাসনা মনে আসলেই তাকে দূরে সরিয়ে দিতে হয় সেই সবের প্রতি এদের তীব্র আগ্রহ। নিত্যদিন সেই সব কামনা পুরনের জন্য চিন্তা ভাবনা উদ্যোগ।
১০) আসুরী সম্পদের অধিকারীরা খুব দাম্ভিক হয়। নিজে সম্মানের অযোগ্য হলেও জোর করে সম্মান আদায় করার চেষ্টা করে এবং তার জন্য অন্যকে লাঞ্ছনা, কটু কথা ,ভয় দেখানো এদের স্বভাব।
১১) শরীরের ক্ষতিকর কাদ্য খাওয়া, নিয়মিত মদ্য পান , নেশাগ্রস্থ থাকা, উচ্ছিষ্ট খাবার, অতি প্রদাহী ( বেশী ঝাল মশলা দেওয়া খাবার) অতি অম্ল খাবার এদের খুব পছন্দ।
১২) কাম ক্রোধের অধীন , অনৈতিক বিষয় বাসনা, ভোগ্য বস্তু লাভের অদম্য ইচ্ছা।
১২) “আজ আমার এতো লাভ হলো, এবার আরো বেশী কি করে পাবো কাল “ এটাই আসুরী সম্পদের অধিকারীদের নিত্য চিন্তা।
১৩) অহঙ্কার, বল, দর্প, কাম এবং ক্রোধ আসুরী মানুষের সম্পদ।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................