বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে একজন পাহাড়ি কে হত্যা করে আমি এখন খেতে গেছে বাঙালিত্ব নিয়ে।

পাহাড়ে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা অনেক। এই দারিদ্রতাকে কাজে লাগিয়ে একদিকে যেমন তাদেরকে খ্রিস্টান বানানোর কার্যক্রম চলে, একইভাবে সেখানে ইস লামী এনজিওগুলো সক্রিয় পাহাড়ি আদিবাসীদের মুস লিম বানানোর জন্য। পাহাড়ে মস জিদ, মাদ্রাসা নির্মাণের হিড়িক বেড়েছে। স্থানীয়দের জমি ও অর্থের বিনিময়ে মুস লিম করে তাদেরকে দিয়ে মস জিদ বানানো, মাদ্রাসা চালু করে ইস লামিক সংস্কৃতি ও জাতিবোধ দৃঢ় করতে অনেকগেুলো মহল সেখানে সক্রিয়। এ ধরণের ধর্মীয় কার্যক্রম হয়ত ধর্মীয় অধিকারের মধ্যে পড়ে। কাজেই ত্রিপুরা, চাকমা, মারমাদের মুস লিম কিংবা খ্রিস্টান হয়ে যাওয়া অপরাধ নয়। না খেয়ে উপোস করে বসে থাকলে কোন ঈশ্বরই যখন খাবার পাঠায় না তখন ঈশ্বর পরিবর্তন করে যদি খাবার ও দারিদ্রতা মেটে মন্দ কি?

এসব কারণেই পাহাড়ে ধর্মান্তর বেশ পুরোনো বিষয়। সম্প্রতি ত্রিপুরা জাতি থেকে ‘বেরণ চন্দ্র ত্রিপুরা’ ওরফে ওমর ফারুক নামের একজন নওমুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকে সেটেলার বাঙালী মুস লমানরা বলছে ওমর ফারুক মুস লমান হওয়ার কারণেই তাকে পাহাড়িদের সংগঠন জনসংহতি সমিতি হত্যা করেছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ওমর ফারুক ধর্মান্তর হয়েছিলো তিন বছর আগে। এলাকাতে সে একটা মসজিদও তৈরি করেছিলো। মুস লিম হওয়ার আগে সে একবার খ্রিস্টানও হয়েছিলো। পাহাড়ের মানুষজন ধর্মান্ত হওয়া পরিবারগুলো দেখে দেখে অভ্যস্থ। কিন্তু হঠাত করে ওমর ফারুককে হত্যার পর বাঙালী সংগঠনগুলোর ‘ওমর ফারুকের ইস লাম গ্রহণ করার জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে’ এঙ্গেল থেকে জোর দেয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। একই সঙ্গে পাহাড়ী আদিবাসীদের অধিকার ও পাহাড়ে অবৈধ বাঙালী বসতির বিরুদ্ধে জনসংহতি সমিতির সঙ্গে বাঙালীদের যে দ্বন্দ্ব সেটা সকলেরই জানা। সেই তাদেরকে হত্যার জন্য দায়ী করে এবার বলা হচ্ছে ধর্ম পরিবর্তন করে মুস লিম হওয়ায় নাকি জনসংহতি এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি সব সময়ই বলে এসেছি, পাহাড়ে যে ‘বাঙালী’ ‘পাহাড়ি’ দ্বৈরথ, তা আসলে ‘মুস লিম- পাহাড়ী’ দ্বৈরথ। যেখানে যে দেশে ৯০ ভাগ বাঙালী কি উড়িয়া কি ওহমিয়া কি মঙ্গলীয় হোক- যদি তারা ধর্মে মুস লিম হয় তাহলে সেখানে একটাই জাতীয়তাবাদ- 'মুস লিম জাতীয়তাবাদ'। পাহাড়ে মসজিদ মাদ্রাসা করে ভরে ফেলানোর উদ্যোগকে কি করে স্রেফ বাঙালীত্বকে ইস্যু বলতে হবে? যারা দাবী করছে ওমর ফারুককে মুস লিম হওয়ার কারণেই হত্যা করা হয়েছে, তারা কি নিজেদের বাঙালীত্বকে এখানে জাহির করছে? করছে না। যেহেতু পাহাড়ে ধর্ম কার্ড খেলে দেয়া হয়েছে, তাতেই ভয় বেশি হচ্ছে। এই খেলায় পুড়ে যেতে দেখেছি মানুষের ঘরবাড়ি পাড়া মহল্লা। কেউ যেন এরকম খেলা বিনা বাধায় খেলে দিতে না পারে তার জন্য সবাইকে সাহসী ও সতর্ক থাকতে হবে।

#সুষুপ্তপাঠক
#susuptopathok

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted