রমনা কালীবাড়ির রক্তমাখা ভয়ঙ্কর ইতিহাস
শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।। ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কবিন্দ শুক্রবার ১৭ই ডিসেম্বর ২০২১ রমনা কালীমন্দির উদ্বোধন করেছেন। ভারত সরকারের টাকায় এটি পুনর্নির্মিত হয়েছে। ভারতের প্রয়াত বিদেশমন্ত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজ এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ঠিক জানিনা ভারত সরকার কত টাকা দিয়েছে, শুনেছি ৭কোটি টাকা। এতথ্য সত্য হলে প্রশ্ন ওঠে, বাংলাদেশ সরকার এ সামান্য টাকাটা দিলোনা কেন? সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত তো অনেকদিন আগেই বলেছেন, ৪হাজার কোটি টাকা কোন টাকাই না! তাহলে মাত্র ৬কোটি টাকা না দেয়ার কারণ কি? বাংলাদেশ সরকার ৫৬০টি আধুনিক মসজিদ বানাচ্ছে, জনসংখ্যা হিসাবে অন্তত: ৫৬টি মন্দির এবং ১টি প্যাগোডা ও ১টি গীর্জা নির্মাণ করা দরকার, তা হচ্ছেনা। এতে সংখ্যালঘুদের প্রতি সরকারে ‘অগাধ ভালবাসা’ প্রমান হয়? এ সময়ে আমরা রমনার ইতিহাসটা একটু ঘুরে দেখি?
১৯৭১ সালের ২৭ শে মার্চ। পাকিস্তান সেনাবাহিনী সেদিন ঢাকার বিখ্যাত রমনা কালীবাড়িটি ধ্বংস করেছিলো। নিহত হয়েছিলো শ’খানেক। সেই দু:খজনক ঘটনা আজ বিস্মৃতপ্রায়, অথচ কয়েকশ’ বছর পুরানো এই মন্দিরের সাথে ঢাকার ইতিহাস জড়িত। রমনা কালী মন্দিরের সুউচ্চ চূড়া বা মঠ ছিলো একটি মাইলষ্টোন। বহুদূর থেকে মঠটি দৃশ্যমান ছিলো, মঠ দেখেই বোঝা যেতো ওটি রমনা কালীবাড়ি। সেই মঠও নেই, নেই সেই ঐতিহ্যবাহী কালী মন্দির। এখন যেটি আছে, তা ভগ্নাবশেষ! রমনার পাদদেশে রেসকোর্স ময়দান এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী’র নামানুসারে এই উদ্যান, যিনি বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্রের (তথাকথিত) মানসপুত্র’, অথচ তাঁর হাত ‘দি গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং’-এর রক্তে রঞ্জিত।
ঠিক একই জায়গায় না হলেও রমনা কালী মন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম ক্ষুদ্র পরিসরে এখন রমনায় দাঁড়িয়ে আছে। যেটুকু দাঁড়িয়ে আছে, তা মূলত: অনেকটা জোর করে কেঁড়ে নেয়ার মত। পাকিস্তান আর্মী এটি ধ্বংস করে, বঙ্গবন্ধু’র সরকার মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ বুলডজার দিয়ে পরিষ্কার করে। এরপর এটি অধিগ্রহণ করে স্থানীয় সরকার ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত করা হয়। দীর্ঘদিন সেখানে পূজার্চনার কোন সুযোগ ছিলোনা। এরশাদ আমলে আশির দশকে ওয়াইজ ঘাটের ‘ভিআইপি স্যুজ’-র মালিক জনৈক ‘রতন’ স্বাধীনতার পর প্রথম সেখানে পূজা করেন। পুলিশ বাধা দেয়নি। এ খবরটি তখনকার দৈনিক দেশ পত্রিকায় সবিস্তারে প্রকাশিত হয়েছিলো। রমনা কালীমন্দির নামে এখন যেটুকু আছে, সেটি মূলত: বিএনপি আমলে গয়েশ্বর রায় ফিরিয়ে আনেন। বর্তমানে ভারত সরকারের সহায়তায় মন্দিরটি পুন্:নির্মাণের চেষ্টা চলছে।
উইকিপিডিয়া জানায়, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আর্মী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চলাকালে রমনা কালী মন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রমটি ধ্বংস করে। ২৭শে মার্চ মিলিটারী মন্দিরে ৮৫জনকে হত্যা করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ২৬শে মার্চ মন্দিরে প্রবেশ করে, ঘেরাও করে রাখে, কাউকে বের হতে দেয়না। ২৭শে মার্চ রাতে কার্ফু চলাকালীন সময়ে সার্চলাইট জ্বালিয়ে মন্দিরের সবাইকে লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রেখে পাখির মত গুলি করে হত্যা করা হয়? এরমধ্যে মন্দিরের অধ্যক্ষ স্বামী পরমানন্দ গিরি ছিলেন। জানা যায়, মৃত্যু’র আগে তিনি অন্যদের বলে গেছেন, তোমাদের বাঁচাতে পারলাম না, কিন্তু দেশ স্বাধীন হবে। হত্যাযজ্ঞ শেষে বোমা মেরে মন্দির উড়িয়ে দেয়া হয়? কথিত আছে, খাঁজা খয়েরুদ্দিন তখন পাক-সেনাদের সাথে মন্দিরে উপস্থিত ছিলেন?
সেদিন রমনা কালী মন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রমে যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁদের ক’জনের একটি তালিকা আছে, এঁরা হচ্ছেন, শ্রীমৎ স্বামী পরমানন্দ গিরি, রঘু লাল দাস, বিভূতি চক্রবর্তী, নান্দু লাল, সরোজ, রাজকুমার, গণে মুচি, বলিরাম, সুরত বল্লি, ধীরেণ লাল ঘোষ, শ্রীমতি লক্ষ্মী চৌহান, হীরা লাল পাশী, বাবু লাল, সূর্য, রামগোপাল, সন্তোষ পাল, সুনীল ঘোষ, মোহন দাস, রাম বিলাস দাস, জয়ন্ত চক্রবর্তী, বিরাজ কুমার, ভোলা পাশী, বাবু লাল দাস, গণেশ চন্দ্র দাস, সরষু দাস, বসুন্ত মালী, শৈবল্লি, কিশোরী ঠাকুর, সাংবাদিক শিব সাধন চক্রবর্তী, পুরণ দাস, মানিক দাস, রমেশ ধোপা, বাবু নন্দন, হিরুয়া, বাবুল দাস দ্রুপতি, বাদল চন্দ্র রায়, ত্রিদিব কুমার রায়, রামগতি এবং বারিক লাল ঘোষ।
উইকিপিডিয়া বলছে, মোঘল আমল থেকে হিন্দু দেবী ‘কালী’র নামানুসারে রমনা কালীবাড়ি। এর আয়তন ছিলো ২.২৫একর। এটি রমনা পার্কের দক্ষিণ ও বাংলা একাডেমির উল্টোদিকে অবস্থিত। পাকিস্তান আর্মি ২৭শে মার্চ এমন্দিরে হত্যাযজ্ঞ চালায়, নিহতদের সবাই হিন্দু। নেপালী লোকজ সংস্কৃতি থেকে জানা যায়, হিমালয় থেকে কালীভক্তরা বাংলায় এসে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও মন্দিরটি বহু শতাব্দী পুরানো, তবে এর মূল উন্নয়ন ঘটে রাজেন্দ্র নারায়ণের স্ত্রী রানী বিলাসময়ী দেবী’র সহযোগিতায় (১৮৮২-১৯১৩), ঐ সময় এটি ঢাকার একটি ল্যান্ডমার্ক ছিলো। সুরজিৎ ভট্টাচার্য্য জানাচ্ছেন, জনশ্রুতি আছে যে, নেপাল থেকে এক হিন্দু কালীভক্ত এসে মন্দিরটি নির্মাণ করেন। পরে ভাওয়ালের রানী বিলাসমনি এটি সংস্কার করেন। মানসিংহ ও বারভূঁইয়ার কেদার রায় আবার নুতন করে মন্দিরটি নির্মাণ করে নাম দেন, ভদ্রকালী বাড়ী। কালক্রমে এটি রমনা কালীবাড়ি হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। আশ্রমের পাশে একটি বিরাট দীঘি ছিলো। রানী বিলাসমনি এটি খনন করেন। কারো কারো মতে একজন ইংরেজ মেজিষ্টেট এটি খনন করান। এই দীঘি আশেপাশের সবাই ব্যবহার করতেন এবং এটি ছিল ব্যায়াম ও সাঁতারের জন্যে উন্মুক্ত।
মন্দিরের ধ্বংসকাহিনী কোথাও লিপিবদ্ধ ছিলোনা, মূলত: মানুষের মুখে মুখে এটি প্রচারিত ছিলো, ২০০০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এবিষয়ে গণশুনানীর লক্ষ্যে ‘রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম ধ্বংস ও গণহত্যা কমিশন’ গঠন করে। ৬-সদস্যের এই কমিশনের সদস্যরা ছিলেন, বিচারপতি কে এম সোবহান, চেয়ারম্যান; প্রফেসর মুনতাসির মামুন, সদস্য; লেখক শাহরিয়ার কবির, সদস্য; সাংবাদিক বাসুদেব ধর, সদস্য সচিব; দ্বীপেন চ্যাটার্জী, সদস্য, এবং চন্দ্রনাথ পোদ্দার, সদস্য। কমিশনের দায়িত্ব ছিলো (এ) ২৭মার্চ ১৯৭১-এ রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রমে গণহত্যায় নিহতদের তালিকা প্রস্তুত করা (বি) প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নিয়ে হতাহত, ভুক্তভুগীদের ওপর অত্যাচার, খুন, ও মন্দির ধ্বংসের বিবরণ সংগ্রহ করা (সি) মন্দির ও আশ্রমের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরা (ডি) মন্দির ও আশ্রম ধ্বংসের কারণ নির্ণয় বা ভবিষ্যতে মন্দির পুনর্নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রতিনিধিদের মতামত নেয়া এবং (ই) মন্দির ও আশ্রম পুন্:বিনির্মানে ১৯৭২ সাল থেকে নেয়া উদ্যোগ এবং অন্যান্য আনুসাঙ্গিক বিষয় তুলে ধরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে ১৩এপ্রিল ২০০০ থেকে ৫মাসব্যাপী এক গণশুনানীতে প্রায় ১শ’র বেশি মানুষ সাক্ষ্য দেন্। এর চেয়ারম্যান বিচারপতি কে, এম, সোবহান সেপ্টেম্বর ২০০০ সালে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দেন। কমিশন প্রায় ৫০জন ভিকটিমকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হন।
সাক্ষ্যকালে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২৬শে মার্চ পাকিস্তান আর্মী সকাল ১১টায় রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রমে প্রবেশ করে। তাঁরা এটি ঘেরাও করে রাখে এবং কাউকে বাইরে যেতে দেয়নি। এ সময় মুসলিম লীগ নেতা খাঁজা খয়েরুদ্দিন তাদের সাথে ছিলেন। ২৭শে মার্চ সন্ধ্যায় কার্ফু শুরু হয়, রাত ২টায় সার্চলাইট জ্বালিয়ে শুরু হয় হত্যাযজ্ঞ। এসময় কামান থেকে গোলা ছোড়া হয় এবং মন্দিরে বিস্ফোরক ছোড়া হয়। এতে মন্দিরের পেছনের অংশ ও মূর্তি ধ্বংস হয়। মন্দিরের বাসিন্দারা ভয়ে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করে, কিন্তু মিলিটারি তাঁদের ধরে লাইন করে দাঁড় করায়। মহিলারা যাঁরা লুকিয়ে ছিলেন, বেয়োনেটের মুখে তাঁদের লাইনে দাঁড় করানো হয়, মহিলা ও শিশুদের একটি লাইন এবং পুরুষদের অন্য একটি ভিন্ন লাইনে দাঁড় করানো হয়। লাইনের সম্মুখে দাঁড় করানো হয় মন্দিরের পুরোহিত পরমানন্দ গিরিকে, তাঁকে দিয়ে জোরপূর্বক ‘কলেমা’ পড়ানো হয় এবং এরপর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ও গুলি করে তাঁকে হত্যা করা হয়। অন্যদের একই কায়দায় এবং ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয়। এ হত্যাযজ্ঞ যখন চলছিলো, রমনা কালীবাড়ি তখন আগুনে পুড়ছিলো। এ সময় প্রায় ৮০-১০০জনকে হত্যা করা হয়েছিলো বলে জানা যায়।
প্রথমে পুরুষদের হত্যা করতে দেখে মহিলারা চিৎকার করতে শুরু করলে তাদের বন্দুকের বাট দিয়ে আঘাত করা হয়, অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। হত্যাযজ্ঞ শেষ হলে পাকিস্তানী সৈন্যরা হতাহত সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দেয়। অনেককে হত্যা আগে ‘জয়বাংলা’ বলতে বাধ্য করা হয়? মন্দিরের সাথে গরুর ঘরে তখন প্রায় ৫০টি গরু ছিলো, এসব অবলা প্রাণীও রক্ষা পায়নি, এদের পুড়িয়ে মারা হয়! ভোর ৪টার দিকে ‘অপারেশন রমনা’ শেষ হয়, এ দুই ঘন্টা রমনা কালীবাড়িতে আর্ত-চিৎকার, আগুন, মানুষ পোড়া গন্ধ, গুলি, বোমার শব্দে এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। সৈন্যরা কিছু যুবতীকে বাঁচিয়ে রেখেছিলো, যাওয়ার সময় তাঁরা ওদের সাথে করে নিয়ে যায়! প্রত্যক্ষদর্শীর মতে ওঁরা ১২জন যুবতীকে ধরে নিয়ে যায়, যাদের আর কখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। মন্দির পুরোহিতের স্ত্রী সুচেতা গিরি বা জটালি মা ও অন্য কয়েকজন এ হত্যাকান্ড থেকে রেহাই পায়, পরদিন সকালে তাঁরা ভস্মীভূত মন্দির ও নিহত প্রিয়জনকে পেছনে ফেলে পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুন আলী ফকির, শাহবাগ মসজিদের খাদেম, যেটি রমনা কালীমন্দির থেকে বেশি দূরে নয়, জানান, পাকিস্তান আর্মী সবাইকে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ এবং ‘লা-ইলাহা-ইল্লাহু’ বলতে বাধ্য করে। লক্ষী রানী বেঁচে যাওয়াদের একজন, তিনি জানান, তাঁর বাবা কিশোর ঠাকুর ২৫শে মার্চ ১৯৭১ মুক্তাগাছা থেকে তাকে দেখতে মন্দিরে আসেন। লক্ষীরাণী স্বামীসহ রমনা মন্দিরে থাকতেন। পাকিস্তানীরা তার বাবাকে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলী করে হত্যা করে এবং তাঁর লাশ আগুনে নিক্ষেপ করে। দৈনিক ইত্তেফাকের সাব-এডিটর আহসানউল্ল্যাহ জানান, ৩দিন পর রমনা কালীমন্দিরে গিয়ে তিনি মন্দিরের ভেতরে ১০টি লাশ এবং বাইরে ১৪টি আধপোড়া, গলিত লাশ দেখতে পান। কমলা রায় বেঁচে যাওয়া আরো একজন। তিনি জানান, পাকিস্তানী সৈন্যরা মন্দিরের চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলে। ভয়ে মহিলারা সবাই হাতের শাঁখা ও সিঁথির সিঁদুর মুছে ফেলেন। তিনি বলেন, পুরুষদের মাটিতে ফেলে অত্যাচার করা হয়, অনেকে এমনিতেই আধ্মরা হয়ে যায়, এদের সবাইকে মেরে আগুনে ফেলে দেয়া হয়, এমনকি শিশুদের আগুনে নিক্ষেপ করা হয়!
কমিশন ঐ বীভৎস হত্যাকান্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেঁচে যাওয়া কেউ থাকলে বা তাঁদের নিকট আত্মীয় কেউ থাকলে তাঁদের নামধাম জমা দেয়ার জন্যে বিশ্বব্যাপী আহবান জানিয়েছিলো, যাতে ভবিষ্যতে কোন স্মৃতিসৌধ নির্মিত হলে ঐসব নাম তাতে স্থান পায়। ডেইলি ষ্টার জানায়, পূজা উদযাপন পরিষদ ২২শে জুন ২০০৬ সালে মন্দিরটি স্থানান্তর না করার জন্যে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বরাবরে একটি স্মারকলিপি দেয়। ইয়াহু নিউজ ২৬ জুন ২০০৬-এ জানায়, মন্দির কমিটি’ র চেয়ারম্যান গয়েশ্বর রায় মন্দিরের জন্যে জমি বরাদ্ধ করার অনুমোদন দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তার মতে নির্ধারিত স্থানটি মন্দিরের মূল জায়গার সন্নিকটে।
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু এটি স্থানান্তর করতে চেয়েছিলেন, কিন্ত হিন্দুরা তা মেনে নেয়নি। ঢাকা ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক ও ইতিহাসবিদ ড: মুনতাসির মামুন লিখেছেন, যদিও মন্দিরটি তৈরী হয়েছে হিন্দু কারুকার্য্যের ভিত্তিতে, এর ১২০ ফুট সুউচ্চ ‘শিখর’টি বঙ্গবন্ধু’র ৭ই মার্চ ১৯৭১ ভাষণের ছবিতে বহুলভাবে প্রচারিত হয়েছে। মায়ের ডাক পত্রিকা বলছে, পাকিস্তান আর্মী মন্দিরটি ধ্বংস করেছে, বাংলাদেশ সরকার মন্দিরের জমি একটি ক্লাবকে দিয়েছে (ঢাকা ক্লাব)। ৩১শে জানুয়ারি ১৯৭২ দৈনিক পূর্বদেশ জানায়, পাকিস্তান আর্মী ১৯৭১ সালের এপ্রিলের শেষ বা মে মাসে প্রথমে পুনরায় রমনা কালিবাড়ীতে হানা দেয়! রমনা কালীবাড়ি ফিরে পেতে ১৯৮৪ সালে সিভিল কোর্টে মামলা হয়, তবে মামলায় শেষপর্যন্ত কি হয়েছে, তা অজানা।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................