মক্কাশরীফে আল্লা , হুবাল আর ৩ দেবীর ইতিহাস !

মক্কাশরীফে আল্লা , হুবাল আর ৩ দেবীর ইতিহাস ! এই ইতিহাস সবাই জানে ! মোল্লারা না জানার ভান করে ! হ  
****************************************
আল্লাহ কি আসলেই মক্কায় পুজিত ৩৬০ দেবতার একজন ছিলেন?
বন্ধু রশিদ খান মক্কায় মূর্তি পূঁজা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলো ! জানতে চেয়েছি নবী মহম্মদের পিতা মাতা কোন ধর্ম পালন করতো ! যেহেতু প্রাক ইসলামি যুগে কুরাইশ বংশের লোকেরা মূর্তি পূঁজা করতো , সেই থেকে বলা যায় , নবীর পিতা মাতা এবং বংশের সবাই কুরাইশ বংশে ছিল এবং তারা মূর্তি পূঁজা করতো ! 
কিন্তু একটি হাদিসে আমরা দেখতে পাই নবী ছিলেন ইসমাইল(আঃ) এর বংশধর। তিনি ইব্রাহীম (আঃ) এর প্রচারিত ধর্ম পালন করতেন। তিনি জীবনে কখনো মূর্তিপূজা করেননি এমনকি মূর্তি স্পর্শও করেননি। শিশুকাল থেকেই তিনি মূর্তিপূজা অপছন্দ করতেন।
হাদিসটা যদি সত্য হয় , তাহলে আমরা নিশ্চিত নবী ইহুদিদের আল্লাকে এবাদত করতেন ! 

বর্তমান যুগে বাঙালি মুসলমানেরা হিন্দুদের প্রতিমাপূজা বিরোধী, অথচ কাবাকে আল্লাহর ঘর ভেবে হিন্দুদের অগ্নি দেবতাপূজার মতো সাত বার ঘুরাঘুরি, হজ্জ করতে মাথা মুন্ডন করা, কাবার দিকে মুখ করে নামাজ আদায়, কালো পাথরে চুমু খায়। এসব হিন্দুদের মতো প্রতিমাপূজারই ভিন্ন রূপ বলে যারা দাবি করে তারা সম্পূর্ণ ভুল জগতে বাস করে ! 

কাবাতে দেবদেবীর মূর্তি নিয়ে হৈচৈ করার কোন কারন নেই ! কাবাতে যে দেবদেবীর মূর্তি ছিল সেটা সম্পূর্ণ সত্য ! কিন্তু সেই দেবদেবী হিন্দুদের দেবদেবী ছিলোনা ! এখানে হিন্দুদের গর্ব করার কিছুই নেই ! 

আমরা সবাই জানি মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম ছিল ইহুদী ধর্ম !! তারপর আসে খ্রিস্টান ধর্ম । তার পর আসে ইসলাম ধর্ম ! তাহলে প্রশ্ন থাকতে পারে মক্কায় আল্লার ঘরে ৩৬০ টা দেবদেবীর মূর্তি কোথায় থেকে এলো ? 


তাহলে আসল কথায় আসা যাক ! ইসলামের আগমনের পূর্বে, মক্কার কাবায় অসংখ্য দৈত্য, জিন, উপদেবতা বা সাধারণ আদিবাসী দেবতা ও অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তি ছিল। এগুলি ছিল প্রাক-ইসলামী আরবের বহুদেববাদী সংস্কৃতির প্রতিভূ। কাবা ছিল হুবাল নামে এক দেবতার প্রতি উৎসর্গিত। এখানে তিন প্রধান দেবী লাত, উজ্জা ও মানাতের মূর্তি ছিল। এই বৈচিত্র্য থেকে বোঝা যায়, আরব্য পুরাণ এক ব্যতিক্রমী প্রসার লাভ করেছিল।প্রাক-ইসলামী দেবদেবীদের অনেক মূর্তির প্রমাণ পাওয়া যায়। বিশেষ করে কাবার কাছে এই রকম মূর্তি অনেক ছিল। এই ধরনের মূর্তির সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৩৬০।

আধুনিক ইসলামে আল্লাহ্‌ যেমন একমাত্র ঈশ্বর, প্রাক-ইসলামী আরবে তা ছিল না। ‘আল্লাহ্‌’ শব্দটির অর্থ মক্কার ধর্মে সম্ভবত অস্পষ্ট। মুহাম্মদের বাবার নাম ছিল আব্দ আল্লাহ্‌ ইবন আব্দ আল মুত্তালিব; যার অর্থ ‘আল্লাহ্‌-এর দাস’। প্রাক-ইসলামী খ্রিস্টান, ইহুদি ও হানিফ নামে পরিচিত একেশ্বরবাদী আরবরা ‘বিসমিল্লাহ্‌’ শব্দটি ব্যবহার করত; যার অর্থ ‘আল্লাহ্‌-এর নামে’। আরবের শিলালিপিগুলিতে ইসলামের আবির্ভাবের কয়েক শতাব্দীর আগেও ‘আল্লাহ্‌’-কে সর্বোচ্চ দেবতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মক্কায় তিন প্রধান দেবী ছিলেন লাত, উজ্জা ও মানাত। এঁদের প্রত্যেকের নিজস্ব ক্ষেত্র ছিল এবং তাইফের কাছে মূর্তি সহ মন্দিরও ছিল।এটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।আল-লাত বা আল্লাত ছিলেন পাতালের দেবী। আল-উজ্জা অর্থাৎ ‘সর্বশক্তিময়ী’ ছিলেন আরবের উর্বরতার দেবী। যুদ্ধে রক্ষা ও জয়ের জন্য তার কাছে প্রার্থনা করা হত।আর মনাত ছিলেন ভাগ্যের দেবী।

মক্কার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেবতাদের অন্যতম ছিলেন হুবাল। হুবাল মক্কা নগরীতে পূজিত দেবতা ছিলেন। কাবা শরীফের হুবালের একটি মূর্তিকে পূজা করা হতো। এখানকার ৩৬০টি দেবমূর্তির মধ্যে তার মূর্তিটিই ছিল শ্রেষ্ঠ। 
হুবালের উপাসনা এবং রক্ষনাবেক্ষণের ভার ছিলো মক্কার কুরাইশ বংশের উপর্। ৬২৪ খিস্টাব্দে বদরের যুদ্ধে মূর্তিপূজারীগণ মুহাম্মাদ এর অনুসারী দের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ৬৩০ খিস্টাব্দে মক্কা বিজয়ের পর মুহাম্মদ কাবাঘরের রক্ষিত হুবাল সহ ৩৬০টি মূর্তি ভেঙে ফেলেন।

প্রাক-ইসলামী আরবে মক্কাবাসী সহ বহুদেববাদী আরবদের কাছে আল্লাহ্‌ ছিল সম্ভবত একজন সৃষ্টিকর্তা দেবতা বা দেবমণ্ডলীর প্রধান দেবতা।
ইসলামের আজকের দিনে আল্লাহ্‌ বলতে যেমন একমাত্র ঈশ্বর বোঝায়, ইসলাম আবির্ভাবের পুর্বে আরবে তা ছিল না। আল্লাহ শব্দটির ইতিহাস ইসলামের চেয়ে অনেক প্রাচীন এবং বহুল প্রচলিত। 
অতয়েব ইতিহাস ঘটলে আমরা জানতে পারি আল্লা তখন ছিল একটা দেবতার নাম ! 

আমি জানি বন্ধু রশিদ ভাই কাবার এই রহস্য সম্পর্কে জানতে চান ! ইসলাম ধর্মের প্রধান নবী মুহাম্মদ এর জন্মেরও অনেক আগে মানে কয়েক হাজার বছর আগে থেকেই মক্কা শহরের এই কাবা নামক মন্দিরটি বিভিন্ন ধর্মীয় মানুষের একটি ধর্মীয় উপাশনালয় ছিলো। কাবা প্যাগান ধর্মাবলম্বীদের দেওয়া একটি নাম। কাবা শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে চারকোনা বা বর্গাকার। প্যাগান ধর্মাবলম্বি সহ মক্কার আদীবাসীদের বিভিন্ন দেব দেবীর মুর্তিতে কাবা পরিপুর্ন ছিলো। সেখানে একই সাথে অনেক ধর্মের মানুষের অনেক রকম আচার অনুষ্ঠান পালন করা হত। যায়গাটি ইসলাম ধর্ম তৈরি হবার আগ পর্যন্ত একটি সাংস্কৃতিক অঙ্গন হিসেবেও পরিচিত ছিলো সেখানে নাচ গান এর কথাও উল্লেখ আছে অনেক যায়গায়। ছবি আকার প্রতিযোগিতা হতো কাবা সহ তার আশেপাশের অঞ্চলে। আর বর্তমানে যে কাবা শরিফ তা ছিলো এই হুবাল দেবতার নামে উৎসর্গ করা মন্দির। আর এই কাবা সহ মক্কার প্রধান দেবতা ছিলো এই হুবাল। সেই হুবালের তিন কন্যা, তিন প্রধান দেবী লাত, উজ্জা ও মানাতের মূর্তি ছিল এই কাবা শরিফে ও আরো দুইটি কাবা ঘরে যা পরে ইসলাম প্রচারক নবী মোহাম্মদ তার দলবল নিয়ে ভেঙ্গে ফেলেন।
এখন আমরা জানি ! 

আমার এই তথ্যগুলো ইতিহাস এবং ইউকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ ! ইতিহাস কে কিভাবে অশ্বিকার করা যায় ? কোরান আর হাদিসের সাথে ইতিহাসের কোন সম্পর্ক নাই ! জেনেশুনে মন্তব্য প্রশংসনীয় ! না জেনে মন্তব্য করা অপ্রয়োজনীয় ! হ 
( তথ্য সংগ্রহ )


0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted