ঐশ্বরিক শক্তিও ইসরাইলকে পরাজিত করতে পারেনি।

ঐশ্বরিক শক্তিও ইসরাইলকে
পরাজিত করতে পারেনি।
🇸🇻🇸🇻🇸🇻🇸🇻🇸🇻🇸🇻🇸🇻🇸🇻🇸🇻🇸🇻🇸🇻🇸🇻

ইসরাইলের সাথে প্যালেস্টাইনীদের বিবাদের কারণ যতটুকু না ভৌগোলিক তারচেয়ে অনেক বেশী ধর্মীয়।কারন কোরানে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ রয়েছে,"হে মুমিনগণ তোমরা ইহুদি ও নাসারাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না।তারা একে অপরের বন্ধু।আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে সে নিশ্চয় তাদেরই একজন।নিশ্চয় আল্লাহ যালিম কওমকে হেদায়ের দেন না(সুরা আল মাযিদাহ আয়াত নং-৫১।ইসলামের এই নির্দেশনার ফলে ইসরায়েলের সাথে কোন মুসলিম দেশের কুটনৈতিক সম্পর্ক নেই।মানবজাতির প্রতি ইসলামের যে ভালবাসার কথা বলা হয় তা এক চুড়ান্ত মিথ্যাচার অন্তত গ্রন্থে তাই লিখা।ইসলামের অস্তিত্বের মূলে রয়েছে অমুসলমানদের প্রতি ঘৃনা।অমুসলিমদের শুধু নরকের অধিবাসী বলেই ইসলাম  ক্ষান্ত হয়নি মুসলমান ও অমুসলমানদের মধ্যে চিরস্থায়ী এক ঘৃণা ও সংঘাত বিদ্যমান রাখাই ইসলামের উদ্দেশ্য।ফলে ইসরাইলের সাথে মুসলিম দুনিয়ার বিবাদ গ্রন্থেরই প্রতিফলন।

কেন ইহুদিরা মুসলমানদের কাছে দুশমন হিসাবে চিন্থিত তার অনেক কারন রয়েছে।তবে উল্লেখযোগ্য কারণ হলো হযরত মুহাম্মদ যখন মদিনা দখল করে তখন মদিনার ইহুদিদের মনে ত্রাসের সঞ্চারের জন্য নবী প্রথমে নজির ও কুরাইজা গোত্রের ইহুদিদের গনহত্যা করেছিলেন।কুরাইজাদের ৮০০ সক্ষম পুরুষকে মদিনার বাজারে একটি গুদাম ঘরে আটক করে রাখা হয়।পরের দিন ভোরে ফজরের নামাজের পরেই শুরু হয় কোতল পর্ব।৫/৬ জন বন্দীকে ডেকে এনে গর্তের কিনারায় উপুড় হয়ে শুয়ে পড়তে বলা হত।আর নবীর চাচা হামজা এবং চাচাত ভাই তালহা, যুবায়ের এবং আলী তাদের গলা কেটে গর্তে ফেলেছিল।এরপর কুরাইজা মহিলাদের মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয় বয়স্কা মহিলা ও শিশুদের বেদুইন উপজাতি লোকদের কাছে ঘোড়া ও অস্ত্রশস্ত্রের বিনিময়ে ক্রীতদাস হিসাবে বিক্রি করে দিয়েছিল।কুরাইজা সুন্দরী রেহানাকে নবী আগে থেকেই পছন্দ করে রেখেছিলেন।  সারাদিন ধরে ৮০০ কুরাইজা ইহুদিদের কোতল পর্ব সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে নবী ক্লান্তি দূর করার উদ্দেশ্যে রেহানার সাথে শয়ন করতে গিয়েছিলেন।বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে ইসলামের  প্রবর্তক নবী মুহাম্মদ দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানের সামনে কি অমানবিক পাশবিক ও দানবীয় আদর্শ রেখে গিয়েছেন।তাই সিরিয়া ইরাক আফগানিস্তান বা পাকিস্তানে যে কোন ধরনের নৃশংসতায় আমি আশ্চর্য হই না।

ইহুদিদের প্রতি ইসলামের এই বিদ্বেষ এক নজির বিহীন ঘটনা।ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃনিত গনহতা যা হলোকষ্ট নামে পরিচিত সে গনহত্যায় হিটলার ৬০ লক্ষ ইহুদিকে হত্যা করেও নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি।পৃথিবী থেকে অনেক জাতি অনেক সভ্যতা বিলীন হয়ে গিয়েছে কিন্তু শতচেষ্টা করেও ইহুদিদের বিলিন করা যায়নি।মানুষের দেহের ভিতর কোটি কোটি কোষের মতো সারা পৃথিবীতে ইহুদিরা জাল বিছিয়ে রয়েছে।আর এর পিছনে রয়েছে ইহুদিদের নিজেদের মধ্যে একাত্মতা।
সপ্তম শতক থেকেই ইহুদিরা সর্বকালের শ্রেষ্ঠ জাতি হিসাবে পরিচিত।জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তি অর্থনীতি সমরবিদ্যা সব বিষয়ে এককভাবে ইহুদিদের তুলনায় পৃথিবীতে দ্বিতীয় কোন জাতি নেই যারা ইহুদিদের টেক্কা দিতে পারে।এরাই এখন বিশ্বের বড় বড় সব কোম্পানির শীর্ষে বসে রাজত্ব করছে।আমেরিকাও তার ব্যতিক্রম নয়।ইতিহাস স্বাক্ষী হিটলারের ইহুদি নিধন ফর্মূলা ছিল একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা।

দয়াময় আল্লাহ এই জাতির ধ্বংস কামনা করে কোরানে আয়াত নাজিল করেছেন।সুরা- ২০-৮০,৮১ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,"হে বনি ইসরাইল(ইহুদি)আমি তোমাদেরকে তোমাদের শক্রর কবল থেকে উদ্ধার করেছি।তুর পাহাড়ের দক্ষিন পার্শ্বে তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দান করেছি এবং তোমাদের কাছে মান্না ও সালওয়া নাযিল করেছি।আমার দেয়া পবিত্র বস্তু সমূহ খাও এবং সীমা লঙ্ঘন করো না,তাহলে তোমাদের উপর আমার ক্রোধ নেমে আসবে এবং যার উপর আমার ক্রোধ নেমে আসে সে ধ্বংস হয়ে যায়।কিন্তু আল্লাহর ক্রোধও এই জাতিকে ধ্বংস করতে পারেনি।

শুধু আল্লাহ একা নন সারা ইসলাম দুনিয়া এক হয়েও ইসরাইলকে পদানত করতে পারেনি।১৯৬৭ সালে ইসরালের বিরুদ্ধে মিশর - সিরিয়া - জর্দান - ইরাক মিলিত ভাবে যুদ্ধ করে ৬ দিনের বেশি টিকে থাকতে পারেনি।৬ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনী মিশরের কাছ থেকে গাজা ভূখণ্ড ও সিনাই উপদ্বীপ জর্ডনের কাছ থেকে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম এবং সিরিয়ার কাছ থেকে গোলান মালভূমি ছিনিয়ে নিয়েছিল।আলজেরিয়া,কুয়েত, সিরিয়া,
মরক্কো, পাকিস্তান, পিএলও,
সৌদি আরব,সুদান,এবং  তিউনিসিয়া সক্রিয়ভাবে এই যুদ্ধে ইসরাইলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েও ইসরায়েলের কিছু ক্ষতি করতে পারেনি।বরং এই যুদ্ধে মিশরের নিহত হয়েছিল ১৫০০০ হাজার সৈন্য বন্দি হয়েছিল ৪৩৬৮ জন,জর্ডন হারিয়েছিল ৬০০০ সৈন্য,সিরিয়া ২৫০০,  বন্দি হয়েছিল ৫৯১ জন,ইরাক হারিয়েছিল ১০ জন।অপর দিকে এই যুদ্ধে ইসরাইল হারিয়েছিল মাত্র ২০জন বেসামরিক নাগরিক। অর্থাৎ কোন ঐশ্বরিক শক্তি এই জাতিকে এখনো পর্যন্ত পদানত করতে পারেনি।

ইহুদিরা শুধু হিটলারকে নয় কোরান হাদিস থেকে জানা যায়  ইসলামে অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব করা বা রাখা হারাম।একজন অমুসলিম যতই মহান মানুষ হোক না কেন আপনার যত উপকারই করুক না কেন আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে আপনি তাকে বন্ধু মনে করতে পারবেন না।তার প্রতি আপনার কোন ভালবাসা থাকতে পারবে না এটাই ইসলামের শিক্ষা।সেই শিক্ষা ইহুদিরা ভুল প্রমান করে দিয়েছেন।ইসলামের পুন্যভূমি হিসাবে পরিচিত সৌদি আরব এখন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে সম্পূর্নভাবে ইসরায়েলের উপর নির্ভরশীল।আরব আমিরাত ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।আস্তে আস্তে সব আরব দেশগুলো ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে।

ইসরাইলকে ইহুদি শুন্য করার প্রচেষ্টা প্রথম মুসলিমরাই শুরু করেছিল সপ্তম শতকে ইসরাইল ভূখণ্ড দখল করে। পরবর্তীতে ১০৯৯ সালে খ্রিস্টানরা ১১৮৭ সালে আইয়ূবীয় রাজবংশ - ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মিশরের মামলুক সুলতান - ১৫১৭ সালে ইসরাইল দখল করে নিয়েছিল উসমানয়রা।সপ্তম শতাব্দী থেকেই ইহুদিরা রাষ্ট্রহীন যাযাবরের মতো ইউরোপ আমেরিকা সহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে পালিয়ে বেড়িয়েছে।প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের ওসমানীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর ইসরায়েল ভূখণ্ডটি বৃটিশদের অধীনে চলে আসে এবং বৃটিশরাই প্রথম ১৯১৭ সালে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইহুদিদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্রের ঘোষণা দিয়েছিল।এরপর থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে ইহুদিরা ইসরাইলে এসে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে।১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে দ্বিখণ্ডিত করা সংক্রান্ত ১৮১নম্বর প্রস্তাব গৃহিত হয়। এভাবে ১৯৪৮ সালের ১৪ই মে ইসরাইল স্বাধীনতা পায়।ইহুদিদের এই দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাসকে যারা গ্রন্থের অমুক নির্দেশে ধ্বংস করে দিতে চায় তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে।তামাম আরব জাহান জানে ইসরাইলের ক্ষমতার হাত কত লম্বা।আর যারা ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো লাফালাফি করছেন তাদের জাহান্নামই শেষ ঠিকানা।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted