যতদিন পৃথিবীতে কুরআন হাদিস থাকবে ততদিন জিহাদও থাকবে।

আজকে দেখলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ সভা করবে ভারতের বিজেপি নেত্রীর কথিত নবী অবমাননা নিয়ে। অথচ দেখুন মাত্রই সীতাকুন্ডে যে ভয়াবহ আগুন লেগে এতগুলি মানুষ মারা গেলো, এত মানুষ পঙ্গু হয়ে যাবে, মালিক পক্ষকে গ্রেফতারের দূরে থাক মামলা পর্যন্ত হয়নি, সেই ঘটনা নিয়ে তো সারাদেশে প্রতিবাদ হলো না? আসছে শুক্রবার বাইতুল মোকাররম থেকে জঙ্গি মিছিল বের হবে নিশ্চিত।
চীন থেকে যখন কুরাআন নতুন করে লিখিত আকারে প্রকাশের ঘোষণা আসছিলো তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা কেউ মানববন্ধন করতে আসেনি। বাইতুল মোকাররম থেকেও কেউ মিছিল বের করেনি। দেশে সিডিকেটে ব্যবসা বাণিজ্য, লোভের আর ঘুষের বাণিজ্যে সীতাকুন্ডের এতবড় ঘটনা ঘটে গেলেও যে জাতির ঘুম ভাঙ্গে না, অপরাধীদের আইন ছুঁতে পারে না দেখেও যারা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত, এমনকি কুরআন নতুন করে লেখায়, মসজিদকে বাথরুম বানালেও চীনের বিরুদ্ধে যাদের ঈমানদ্বন্ড দাঁড়ায় না সেখানে যে ‘ভারত’ একটা ফ্যাক্ট এটা বুঝতে হলে রকেট সায়েন্টিস হওয়া লাগে না!

কাতার কি চীনকে ডেকে কখনো সতর্ক করতে পেরেছে? সৌদি আরব চীনকে সতর্ক করতে পেরেছে? পারেনি। বিষয়টা এখানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও অর্থের দিক থেকে কে কার থেকে শক্তিশালী সেটাই মূল বিষয়। চীন দেখিয়ে দিবে জিহাদের বিজ কি করে সমূলে উচ্ছেদ করতে হয়। ৫৭টা ‘মুসলিম দেশ’ দেখবে আর আঙ্গুল চুষবে! বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে যারা ধর্মটর্ম পালন করে না, এমনকি মানে না পর্যন্ত তারাও ভারত ও হিন্দু বিদ্বেষের প্রশ্ন ভীষণভাবে মুসলিম জাতীয়তাবাদী। দ্বিজাতিতত্ত্ব যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীতে বাজেট বাড়তেই থাকবে। এমনকি দ্বিজাতিতত্ত্ব যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন পর্যন্ত বিজেপি আরএসএসও বেঁচে থাকবে। হিন্দু ধর্মকে ইসলামের সঙ্গে একই প্যাটার্নে ফেলে মাপতে গেলে আপনার আন্দাজ কোনদিনই সঠিক হবে না। যতদিন পৃথিবীতে কুরআন হাদিস থাকবে ততদিন জিহাদও থাকবে। কিন্তু হিন্দুরা কখনোই হিন্দু শরীয়া শাসন বা হিন্দু রাষ্ট্র করতে পারবে না। হিন্দুদের অবশ্যই সর্বভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থাই মেনে নিতে হবে। 

এখন আমি এমন কিছু সামনে এনে হাজির করব যেখানে সরাসরি ইহুদী খ্রিস্টান ধর্মকে ও তাদের আলেমদের ‘কিতাব বিকৃতকারী’, মূর্খ, মুনাফেক, ধান্দাবাজ (অর্থের জন্য কিতাব বিকৃতকারী) বলে উল্লেখিত করা হয়েছে। এবং সেই লাইনগুলি যদি আজ বাতিলের দাবী করা হয় তাহলে উল্টো আপনাকে ‘ঘৃণাকারী’ হিসেবে দাগিয়ে দিবে মুসলমানরা। তাদের ভাইরা ভাই বামপন্থীরাও সঙ্গে যোগ দিবে! ইহুদী-খ্রিস্টানদের নিয়ে ইসলামের সরাসরি কট্টাক্ষের জন্য যদি ভ্যাটিকান সিটি মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদুতদের ডেকে ক্ষুব্ধ মত প্রকাশ করে? যদি দাবী করে এই লাইনগুলি বাদ দিতে হবে? উদাহরণ দিচ্ছি না হলে বুঝবেন না।

“তাদের মধ্যে এমন কিছু নিরক্ষর লোক আছে, মিথ্যা আকাঙ্ক্ষা ছাড়া যাদের কিতাব (ঐশীগ্রন্থ) সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নেই, তারা শুধু কল্পনা করে মাত্র” (সুরা বাকারা, আয়াত ৭৮)।

এই আয়াতের তাফসির দেখুন: “লক্ষণীয় যে, আল্লাহ্ তা'আলা ৭৫-৭৮ আয়াতসমূহে ইয়াহুদীদের তিন শ্রেণীর লোকের উল্লেখ করেছেন। তাদের মধ্যে এক শ্রেণী হচ্ছে, আলেম সম্প্রদায় তাদের কাজ হলো আল্লাহর কালাম বিকৃত করা। আরেক দল হচ্ছে মুনাফিক। তারা মুমিনদের কাছে নিজেদেরকে মুমিন হিসেবে পেশ করে। আরেক শ্রেণী হচ্ছে, জাহেল মূৰ্খ গোষ্ঠী। তারা পড়ালেখা জানে না। তারা কেবল অন্যদের অন্ধ অনুসরণ করে থাকে। [ইবনে কাসীর]- তাফসীরে জাকারিয়া।

কাতার সৌদি আরব মিশর তুরস্ক ইরানকে ডেকে যদি অন্যরা এখন বলে এগুলো আমাদের দেশে পাঠ করে প্রচার করা মানে আমাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা তখন মুমিনদের কি জবাব থাকবে?

#সুষুপ্তপাঠক
8 June 2022

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted