প্রযুক্তির যুগে মানুষকে সত্য জানতে বাধা দেয়ার চেষ্টা পাগলামী। তাই এই অন্ধকারগুলোকে নিয়ে প্রশ্ন উটবেই।

যে কোন মুসলমান ঘরে জন্ম নেয়া মানুষ হযরত মুহাম্মদ ও জয়নবের বিয়ের কাহিনী শুনে মারাত্মক শকড হয়। আমিও হয়েছিলাম, আপনিও হয়েছিলেন। সারা দুনিয়ার ইসলামী স্কলারদের কাছে জয়নব ও মুহাম্মদের প্রেম কাহিনী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন- কোন যৌক্তিক উত্তর দিতে পারবে না। নবী মেরাজের রাতে উম্মে হানির ঘরে ধরা পড়েন- এর সদুত্তোর কোন আলেম-ওলামার কাছে আজ পর্যন্ত পাইনি। সাফিয়ারকে বিয়ে ও রাইয়ানাকে রক্ষিতা হিসেবে রেখে দেয়ার সুমহান কি নৈতিক ভিত্তি থাকতে পারে- কোন আল্লাহ বান্দা বুর্জোগ দিতে পারেননি। ব্যক্তিগতভাবে আলেমদের কাছে জিজ্ঞেস করে যা জেনেছি তা এখানে খন্ডন করছি।
জানতে চেয়েছিলাম, কথিত মেরাজের রাতে মুহাম্মদ উম্মে হানীর ঘরে কি করছিলেন? আবু তালিবের কন্যা উম্মে হানীকে যৌবনে মুহাম্মদ বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু চাচার মত না থাকাতে মুহাম্মদ উম্মে হানীকে বিয়ে করতে পারেননি। শেষে চল্লিশ বছর বয়েসের বৃদ্ধা খাদিজাকে বিয়ে করেছিলেন নিতান্তই আর্থিক অস্বচ্চলতার কারণে। একটা ২৫ বছরের যুবক ৪০ বছরের ধনী বৃদ্ধা মহিলাকে বিয়ে করবে শুধু আর্থিক দিক বিবেচনা করেই। সেই খাদিজা যখন মারা গেলেন মুহাম্মদ তখন পুরোপুরি একা। একরাতে কাবাঘরের সামনে সঙ্গীদের সঙ্গে শুয়ে ছিলেন। কেউ কিছু টের পাওয়ার আগেই তিনি উঠে চলে গেলেন উম্মে হানীর ঘরে। হানীর ঘরে তখন তার স্বামী ছিলেন না। সহি হাদিসে উম্মে হানী নিজে বলছেন, নবীজি সে রাতে আমার ঘরে ছিলেন। সঙ্গীদের কারুর ঘুম ভেঙ্গে যাবার পর মুহাম্মদকে দেখতে না পেয়ে ভীত হয়ে পড়ে। তারা সন্দেহ করে কুরাইশরা কি তাদের নবীকে হত্যা করে ফেলল? খুঁজতে খুঁজতে সন্ধান পাওয়া গেলো তাদের নবীজি উম্মে হানীর ঘরে! একটা বিবাহিত নারীর ঘরে সারারাত মুহাম্মদ কি করছিলেন? মুহাম্মদের সাহাবীরাই বিব্রত ছিলেন। উম্মে হানী ভয় পাচ্ছিলেন পরকীয়ার অভিযোগে মুহাম্মদকে না জানি মক্কার লোকেরা নাজেহাল করে বসে। সীরাতে উম্মে হানীর সে আশংকার কথা বলা আছে(ইবনে হিশাম, মিরাজ বিবরণ, পৃষ্ঠা ৭৬)। এই বিপদ থেকে বাঁচার আর কি উপায় থাকতে পারে মেরাজ গমন ছাড়া? মুহাম্মদ সাত আসমান ঘুরে আল্লার সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন- এটা বিশ্বাস করলে আপনি মানবেন যে সেরাতে মুহাম্মদ আর উম্মে হানীর মধ্যে কিছু ঘটেনি। আমি ভেবে বিস্মিত হই মুহাম্মদের উপস্থিত বুদ্ধি দেখে! তিনি জানতেন যারা তাকে নবী হিসেবে বিশ্বাস করেছে, আল্লাহ তার কাছে ওহি পাঠান বলে বিশ্বাস করে- তারা এটাও বিশ্বাস করবে তিনি আকাশ ভ্রমণ করে এসেছেন। ঠিক আছে, না হয় মেনেই নিলাম মেরাজে গিয়েছিলেন, কিন্তু অতরাতে উম্মে হানীর ঘরে নবীজি কি করছিলেন? একটা বেগানা নারীর ঘর থেকেই কেন তাকে উর্ধ আকাশে গমন করতে হবে। মসজিদুল হারাম থেকে যাওয়াই কি সবচেয়ে ভাল দেখাতো না। এরকম প্রশ্নে আলেমওলামাদের মুখে “404 error page not found”!
জানতে চেয়েছিলাম, জয়নবকে নবীজির বিয়ের প্রয়োজন পরল কেন? এতটাই কি জরুরী ছিল যে তার জন্য কুরআনে একটি সুরা নাযিল করতে হয়। জায়েদ মুহাম্মদের জন্ম দেয়া সন্তান নন একজন দাস মাত্র। পরে তাকে সন্তান হিসেবে মক্কার মানুষদের সাক্ষি রেখে দত্তক নেন এবং তার উত্তোরাধীকার ঘোষণা করেন। জায়েদ মুহাম্মদকে আব্বা বলে ডাকতেন। জায়েদকে মুহাম্মদ বিয়ে করিয়ে ঘরে বউ আনেন। সেই বউ মুহাম্মদকে আব্বাজান ও মুহাম্মদ তাকে বৌমা বলে ডাকতেন। সেই বৌমা ও শশুর পরে কিভাবে একসঙ্গে শুতে পারেন ভেবে বমি আসছে! বেচারা জায়েদকে এতবড় সাজা আল্লাহ কেন দিলেন? সে তো ঈমানদার ছিল। এমন কি জয়নব কেলেংকারির পর মুহাম্মদের নির্দেশে জায়েদ জিহাদ করতে গিয়ে বেঘেরো প্রাণটা হারান। মানে সে প্রকৃত ঈমানদার ছিল।… ঘামতে থাকা আলেমদের তখন তোৎলামী শুরু হয়ে গেছে। জয়নবকে বিয়ে করার যৌক্তিকতা দাঁড় করালেন, পালক সন্তানদের সম্পত্তিতে ভাগ পাওয়াকে বাতিল করতেই জয়নবকে নবীজি বিয়ে করেছিলেন। পালক পুত্র বিধান বাতিল করতে কুরআনে একটা আয়াতই যথেষ্ঠ। তারপর মুহাম্মদ জায়েদকে ডেকে বললেই হতো, দেখো বাবা, আল্লাহপাক চান না পালক সন্তান প্রথা মানুষের মধ্যে থাকুক। তাই তোমাকে আজ থেকে আমার পুত্র হিসেবে খারিজ করে দিলাম। তুমি তোমার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র পথ দেখো…। ব্যস্, ল্যাঠা মিটে গেলো। তা না করে মুহাম্মদ জয়নবের সঙ্গে বাসরঘর করে ফেললেন! হাদিসে আছে জয়নবকে মুহাম্মদ আপত্তিকর অবস্থায় ঘরের মধ্যে দেখে ফেলেছিলেন। তখনই তার মনে রং ধরে। কুরআনই বলছে “আপনি অন্তরে এমন বিষয়গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেইঅধিক ভয় করা উচিত… কোরান, ৩৩: ৩৭”।- কি গোপন করেছিলেন মুহাম্মদ লোক লজ্জার ভয়ে? পুত্রবধূর প্রেমে পড়েছিলেন আর তা আইয়ামে জাহেলিয়ার মত কথিত অন্ধকার যুগের মানুষও শুনে ঘৃণায় ছিঃ ছিঃ করে উঠেছিল। পালক পুত্র বিধানকে নিষিদ্ধ করতে কুরআনের এই আয়াতটুকুই যথেষ্ঠ- “//আল্লাহ কোন মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেননি। তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরাযিহার কর, তাদেরকে তোমাদের জননী করেননি এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি।এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন। কোরান, ৩৩: ০৪//”- এটা ঘোষণার পরই মুসলমানরা তাদের পালক সন্তানদের ঘর থেকে তাড়িয়ে দিত। এর জন্য জয়নবের সঙ্গে সেক্স করার তো কোন প্রয়োজন নেই। জয়নব কেলেংকারিকে ঢাকতে তাই যত চেষ্টাই করা হোক কেলেংকারি ঢেকে রাখা যাবে না।



সাফিয়াকে নবীজি বিয়ে করেছিলেন। অস্বীকার করছি না সেকথা। এবার আসুন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ঘটনায়। একটা হিন্দু পরিবারে রাজাকারদের আক্রমন হলো। একটা পরিবারের সব সদস্যদের হত্যা করা হলো। সেই পরিবারের জীবিত একমাত্র সদস্য সুন্দরী একটি মেয়েকে কোন একজন রাজাকার সর্দার ঠিক করলেন তাকে বিয়ে করে ঘরে আশ্রয় দিবেন। সেদিনই কাজি ডেকে মে্যেটিকে বিয়ে করা হলো। রাতে বাসরঘর সারা হলো। তারপর মেয়েটি সারা জীবন সেই বাপ-ভাই-মাকে খুন করা খুনীর সঙ্গে জীবন কাটিয়ে দিলেন কারণ তার কোন পথ ছিল না। এবার আপনারা বলুন ঘটনাটিকে কিভাবে নিবেন? আপনার বিবেকের উপরই ছেড়ে দিচ্ছি- নিজে কোন মন্তব্য করলাম না। সাফিয়া ছিলেন এক ইহুদী সর্দারের স্ত্রী। সাফিয়াকে নবীজি তার ভাগের গণিমতের মাল হিসেবে গ্রহণ করেন এবং সেদিনই বিয়ে করে বাসরঘর সারেন। ((বুখারি, বই –৮, হাদিস–৩৬৭)। মন্তব্য নিস্প্রয়োজন…।
রায়আনা বিনতে আমরকে চিনেন তো আপনারা? ইনি একজন যুদ্ধবন্দিনী। বণু কুরাইজা ইহুদী গোত্রের উপর ষড়যন্ত্রে অভিযোগ মুহাম্মদ তাদের ৭০০ পুরুষকে এক রাতেই হত্যা করেন। যাদের নুনুর নিচে চুল গজিয়েছে এমন শিশুদেরকেও সাবালক হিসেবে বিবেচনা করে হত্যা করা হয়েছিল। সেই ১৪০০ বছর আগে একটা অবলা নারী যে রাজনীতি বুঝে না, আদর্শ বুঝে না তাকে কিনা বিনা অপরাধে যুদ্ধবন্দিনী হতে হয়। তাও আবার একজন নবীর হাতে! একটা রাজ শক্তির হাতে হলে কথা ছিল, কিন্তু একজন নবী কেমন করে নারী ও শিশুদের দাসে পরিণত করতে পারেন? সেই দাসদের আবার বাজারে বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করেন? রোমাম সাম্রাজ্য, পারস্য সাম্রাজ্য- এরকম রাজশক্তি তো ঐশ্বরিক বিষয় নয়। তারা কোন ধর্মের নবী নন। কিন্তু মুহাম্মদ একজন নবী যিনি একটি ধর্ম প্রচার করছেন তিনি কি করে এইসব হতভাগ্য নারীদের বেশ্যায় পরিণত করতে পারেন! জ্বি আজ্ঞে, যাদের এখনি আমার মন্তব্যে বমি আসছে আসছে করছে তাদের জানাতে চাই ঘটনাটা তাই। দেখুন রায়আনা বিনতে আমর নবীকে কি বলেছিলেন যখন নবী তাকে ইসলাম গ্রহণ করে তার স্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, “আপনি আমাকে দাসী হিসেবেই রাখুন। সেটাই আপনার ও আমার উভয়ের জন্যই ভাল হবে।“ (ইবনে হিশাম, বণু কুরাইজা অভিযান, পৃষ্ঠা- ২৪১)। কি বলবে এটাকে? রক্ষিতা নাকি বেশ্যা?
আজকের এই অবাধ তথ্য প্রযুক্তির যুগে মানুষকে সত্য জানতে বাধা দেয়ার চেষ্টা পাগলামী। তাই দিনকে দিন মানুষ ইসলামের ভিতর এই অন্ধকারগুলোকে নিয়ে প্রশ্ন তুলবেই। সেই প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর থাকলে দিতে হবে নতুবা শাক দিয়ে মাছ ঢাকা আর যাবে না…।

Written by : সুষুপ্ত পাঠক

#copyrightfree

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted