বিয়েতে মোহরানার পিছনের আসল কন্টেক্স খুবই ডিস্টার্বিং। মূলত নারীর শরীর পুরুষ স্পর্শ করতে পারবে না মোহরানা আদায় না করলে।

ইসলামিক বিয়েতে মোহরানার পিছনের আসল কন্টেক্স খুবই ডিস্টার্বিং। মূলত নারীর শরীর পুরুষ স্পর্শ করতে পারবে না মোহরানা আদায় না করলে।
তারমানে কিছু একটা দিয়ে স্ত্রীকে বৈধ করে নেয়া, এখানে ভালোবাসা নেই, প্রেম নেই, আছে শুধু দেনা পাওনার হিসেব। এবং আইনের মাধ্যমে সেটা এন্ডোর্স করা মানে আমরা প্রথমে ধরেই নেই, এই বিয়ে নাও টিকতে পারে, যদি না টেকে তাহলে মেয়েটা যেন অর্থনৈতিক ভাবে বঞ্চিত না হয়,তাই এটা একটা সিকিউরিটি।
আমাদের দেশে নারীর প্রতি অন্যায় হয় এটা যেমন সত্য কিন্তু সেটাকে মোহরানার মত এই রকম একটি কনসেপ্ট দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা পুরুষের প্রতি অন্যায় এবং অবিচার করা হয় বলে আমি মনে করি। বিয়ে নামক এমন একটি ইনস্টিটিউশনকে অসম্মান করা হয় বলে আমার মনে হয়। এই দেনা পাওনার হিসেব নিকেশ প্রথম দিন না করে সারা পৃথিবীতে স্বামী স্ত্রীর অধিকার রক্ষা করা যায়, বরং সেটা সৌন্দর্যের বলে মনে হয়। বিয়ের প্রথম দিন কেন আমাকে স্বামীর উপর লক্ষ টাকার বায়না ধরতে হবে অথবা কেনইবা তাকে কিছু একটা দিয়েই আমাকে স্পর্শ করতে হবে এটা আমার বোধগম্য আসে না, তার ভালোবাসাই যথেষ্ট একত্রে বাস করার, মিলিত হবার!! এখন বলবেন- লক্ষ টাকা ধরতে হবে এমন নিয়ম নেই, এটা আমি জানি, কিন্ত মোহরানার নামে যে তাহলে নারী অধিকার সংরক্ষণ করেন এবং এটা নিয়ে গর্ব করেন এই যুক্তি আর ভ্যালিড থাকলো না, তাই না?

যাইহোক- বাকি সকল কিছুর মতই চলুন মোহরানার ইতিহাস দেখে নেই।

মুসলিম বিবাহে যেটা আমরা মোহরানা বা মাহের হিসেবে জানি ইহুদি তোরাতে হিব্রুতে সেটাকে বলে মোহর(Mohor)! এই বৈবাহিক সম্পর্ক তৈরি করার আগে মেয়েকে অর্থ মূল্য দেয়ার এই রেওয়াজ আমরা খুজে পাই প্রাচীন হিটিটি(Hittite) এবং মেসোপটেমিয়ান সভ্যতায়। প্রাচীন আইনের যেই কোডগুলো পাওয়া গেছে সেখানে বিশেষ করে উল্লেখ্য আছে বর এবং তার পরিবারকে অবশ্যক উভয় পক্ষের চুক্তিতে কন্যা এবং তার পরিবারকে অর্থ/সম মূল্য প্রদান করবে। প্রাচীন এরামিয়াক ভাষায় এটাকে বলা হয় মুহরা(muhra)l
যদিও ইহুদি তোরাতে স্বামীর তালাকের ঘটনা পাওয়া যায় যেটার কোর্ট ডকুমেন্ট আছে সেটা ছিল এলিফেনটাইনে( Elephantine) প্রাচীন ইহুদি গোত্রের।

অন্যদিকে আমরা দেখি ইজিপ্ট (from 500 BC) যেই আইন প্র্যাকটিস হতো সেটা কিছুটা ভিন্ন ছিলো।
যদিও ডিভোর্সকে ভালো চোখে দেখা হতো না তবে প্রাচীন মিশরে নারী এবং পুরুষ দুইজনেরই তালাকের সমান অধিকার ছিলো এবং ডিভোর্স প্রাপ্ত হবার পরও সম্পত্তিতে নারীর অধিকার ছিলো।
প্রাচীন পার্সিয়া, প্রাচীন ইজিপ্ট, মেসোপটেমিয়া এবং অবশ্যই আরবে নারী সম্পত্তির মালিক হতে পারতেন।

এখানে প্রাচীন ইজিপ্ট এর ডিভোর্স এর একটা উদাহরণ দেয়া হলো: আমি প্যারাফ্রেইজ করছি যারা ইংলিশ বোঝেন না তাদের জন্য-

"কাল অথবা অন্য কোন দিন যদি এসেম্বলিতে স্বামী বলে ইনি আর আমার স্ত্রী নয় তাহলে ঘরে স্ত্রীর ক্রয়কৃত সকল কিছু তাকে দিয়ে দিতে হবে, তার অর্থকড়ি, তার জামা কাপড়, আটটি সাক্যাল(মুদ্রা) এবং পাঁচ হালার রৌপ্য এবং তার সম্পত্তি, এবং তিনি যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারবেন।

এবং স্ত্রী যদি এসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে বলে আমি আমার স্বামীকে ঘৃণা করি, তাহলে স্ত্রীকে তার স্বামীকে ৭টি সাক্যাল দিতে হবে এবং বাকি সকল কিছু ক্যাশ, জিনিস পত্র, গবাদি পশু অথবা সকল মূল্যবান জিনিষ নিয়ে বের হয়ে যেতে পারবে এবং উপরন্তু স্বামীকে তার সকল সম্পত্তি দিয়ে দিতে হবে!"

নীচে আমি প্রাচীন সেই ইজিপ্ট এর আইনের কোড হুবুহু ইংলিশে তুলে দিলাম।
“Tomorrow, or another day if Ananiah stands up in an assembly and declares, ‘I hate my wife Yehoyishma; she shall not be my wife,’ silver of hatred is upon his head. He shall give her everything she brought into his house, her cash and her clothes, eight shekels and five hallur of silver, and the rest of her property, and she may go where she pleases. And if Yehoyishma declares, “I hate you, my husband; I will not be your wife,” silver of hatred is upon her head. She shall give her husband seven shekels, and go out from him with the rest of her cash, goods, and chattels, worth … And he shall give her the rest of her property.”

যদিও না আমাদের দেশের কিছু শিক্ষিত নির্বোধ একটু প্রাচীন সভ্যতা নিয়ে পড়াশোনা করতো তাহলে গাল গপ্প বালির বাঁধের মত ভেঙে যেতো।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted