সুদর্শনচক্র

সুদর্শনচক্র

ভগবান শ্রীবিষ্ণুর প্রধান শস্ত্র সুদর্শনচক্র। সুদর্শন চক্র দ্বারা তিনি সকল প্রকারের আসুরিক শক্তিকে সমূলে বিনাশ করে ধর্ম সংস্থাপন করেন। ভগবান শ্রীবিষ্ণুর  অবতার শ্রীকৃষ্ণ। তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণেরও প্রধান অস্ত্র সুদর্শনচক্র । ভগবান শ্রীকৃষ্ণের হাতের সুমধুর মোহনবাশীর সাথে সাথে সুদর্শনচক্রও শোভা পায়। চক্রটি ভগবান শ্রীবিষ্ণু এবং তাঁর অবতার শ্রীকৃষ্ণের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। আজও পুরীর জগন্নাথ মন্দির সহ প্রত্যেকটি বৈষ্ণব মন্দিরের চূড়ায় সুদর্শনচক্রকে স্থাপিত করা হয়। কোন মন্দিরের চূড়ায় সুদর্শনচক্র দেখলে সুস্পষ্টভাবে বোঝা যে, মন্দিরটি বৈষ্ণবমন্দির।ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সুদর্শনচক্রের ব্যবহার করে অসুর দানব ও অত্যাচারী নৃপতিদের বধ করেছিলেন। গোলাকার অত্যন্ত গতিসম্পন্ন শস্ত্রটি নিক্ষেপ করে অসুরদের বধ করা হয়। চক্র বলতে কালচক্রকে বোঝায় । ঋগ্বেদে সময়ের গতিকে রথের চক্রের ন্যায় বর্ণনা করা হয়েছে। এই কালচক্রের অধিশ্বর স্বয়ং ভগবান। যে যেরূপ কর্ম করে, কালচক্রের আবর্তনে সে তেমনই শাস্তি পায়।পরমেশ্বরের প্রবর্তিত এ চক্র সম্পর্কে শ্রীমদভগবদগীতায় বলা হয়েছে, সকল চক্রই সৃষ্টির কল্যাণার্থে পরমেশ্বরের কর্তৃক প্রবর্তিত। এই চক্রকে ধর্মচক্র, সৃষ্টিচক্র, জগচ্চক্র, কর্মচক্র ইত্যাদি যে নামেও অবিহিত করি না কেন সকলই এক।

কৰ্ম ব্রহ্মোদ্ভবং বিদ্ধি ব্রহ্মাক্ষরসমুদ্ভবম্।
তস্মাৎ সৰ্বগতং ব্রহ্ম নিত্যং যজ্ঞে প্রতিষ্ঠিতম্।। 
এবং প্রবর্ত্তিতং চক্রং নানুবর্ত্তয়তীহ যঃ। অঘায়ুরিন্দ্রিয়ারামো মোঘং পার্থ স জীবতি।। 
(শ্রীমদ্ভগবদগীতা:৩.১৫-১৬)

"বেদ হতে কর্ম উৎপন্ন এবং বেদ পরমেশ্বর হতে প্রকাশিত। অতএব সর্বব্যাপী পরমেশ্বর সর্বদাই যজ্ঞে বা কর্তব্যকর্মে নিত্য প্রতিষ্ঠিত।
হে পার্থ! যে লোক এই প্রবর্তিত চক্রের অনুবর্তন করে না সে ইন্দ্রিয়াসক্ত এবং পাপাচারী। সে ব্যক্তি বৃথাই জীবন ধারণ করে থাকে।"

সুদর্শনচক্রের ১০৮ টি ফলা রয়েছে। চক্রাকারে এই ফলা গুলি ঘূর্ণনের ফলে শত্রুর শির কেটে ভূপতিত করে। সুদর্শন শব্দটির 'সু' অর্থ শুভ বা মঙ্গল এবং 'দর্শন' শব্দটির অর্থ দেখা। অর্থাৎ যা শুভ বা মঙ্গলকে দর্শন করায়, তাই সুদর্শন। এই শুভ বা মঙ্গল জাগতিক কিছুই নয়, স্বয়ং পরমেশ্বরই। তাই সুদর্শনচক্রকে পরমজ্ঞান বা ব্রহ্মজ্ঞানের প্রতীকও বলা হয়। সুদর্শনচক্রকে ভগবান শ্রীসূর্যের প্রতীক হিসেবেও মনে করা হয়। পুরীর জগন্নাথ ক্ষেত্রে তাঁকে পঞ্চমতের অন্যতম সৌরমতের আরাধ্যদেবতা সূর্য হিসেবে পূজা করা হয়।জগন্নাথদেব সনাতন হিন্দুর শাক্ত, শৈব,গাণপত্য, সৌর এবং বৈষ্ণব এ পঞ্চ মতেরই একত্বের প্রতীক। বলদেব শিবের, শুভদ্রা শক্তির, জগন্নাথ বিষ্ণু, আর সুদর্শন সূর্যের প্রতীক বলে উপাসনা করা হয়। পঞ্চমতের মধ্যে বাকি রইল একটি গাণপত্য। তাই স্নানযাত্রার দিনে জগন্নাথদেবকে গণেশরূপে উপাসনা করা হয়। আবার জগন্নাথদেবের যেহেতু দৃশ্যমান হস্ত-পদ নেই, তাই তিনি হস্ত-পদের পারে ব্রহ্মস্বরূপ। এবং তাঁর বিগ্রহকে বলা হয় দারুব্রহ্ম।গরুড়পুরাণের পূর্বখণ্ডে বলা হয়েছে, সুদর্শন পূজা করলে গ্রহদোষসহ সকল রোগাদি বিনাশ হয়। সেখানে শ্রীবিষ্ণুর মুখে সুদর্শনদেব পূজার মূলমন্ত্রও বর্ণিত হয়েছে। সেই সুদর্শনদেবের মূলমন্ত্র হল, "ওঁ অং হুঁ ফট্ নমঃ"।

হরিরুবাচ।
সুদর্শনস্য চক্রস্য শৃণু পূজাং বৃষধ্বজ্ঞ। 
স্নানমাদৌ প্রকুর্বীত পূজয়েচ্চ হরিং ততঃ ॥ 
মূলমন্ত্রেণ বৈ ন্যাসং মূলমন্ত্রং শৃণুষ্ব চ। 
সহস্রারং হূং ফট্ নমো মন্ত্রঃ প্রণবপূৰ্বকঃ। 
কথিতঃ সৰ্বদৃষ্টানাং নাশকো মন্ত্রভেদকঃ ॥ 
( গরুড়পুরাণ: পূর্বখণ্ড,৩৩. ২-৩ )

"হরি বললেন, হে বৃষধ্বঙ্গ ! সুদর্শনচক্রের পূজাপদ্ধতি তোমাকে বর্ণনা করছি, শ্রবণ কর। প্রথমতঃ স্নান করে, পবিত্র হয়ে শ্রীহরির অর্চনা করবে। হে রুদ্র! যে মূলমন্ত্র দ্বারা ন্যাস করবে, সেই মূলমন্ত্র শ্রবণ কর। 'ওঁ অং হুঁ ফট্ নমঃ' -এ সুদর্শনদেবের মূলমন্ত্র এবং সেই মন্ত্ৰ সৰ্বদুষ্টবিনাশক।"

গরুড়পুরাণের পূর্বখণ্ডের উক্ত অধ্যায়ে সুদর্শনদেব যে স্বয়ং ভগবান শ্রীবিষ্ণুর অভেদমূর্তি এ বিষয়টি সুস্পষ্ট। সেখানে সুদর্শনদেবের ধ্যানমন্ত্রে তাঁকে শঙ্খ, চক্র, গদা এবং পদ্মধারী বলা হয়েছে।

ধ্যায়েৎ সুদর্শনং দেবং হৃদি পদ্মেঽমলে শুভে। শঙ্খচক্রগদাপদ্মধরং সৌম্যং কিরীটিনম্ ॥ 
( গরুড়পুরাণ: পূর্বখণ্ড,৩৩. ৪ )

"সাধক স্বীয় নিৰ্মল হৃদয়পদ্মে শঙ্খ, চক্র, গদা এবং পদ্মধারী, সৌম্যমূর্তি কিরীটধারী সুদর্শনদেবকে ধ্যান করবে।"

সুদর্শনচক্রের মূর্তি বা মণ্ডল অঙ্কন করে সেই মণ্ডলের মধ্যে সুদর্শনদেবকে আবাহন করে গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ প্রভৃতি বিবিধ উপচারে পূজা সুদর্শনদেবকে পূজা করতে হবে। পূজান্তে সুদর্শনদেবের মূলমন্ত্র অষ্টোত্তরশতবার জপ করতে হবে।

আবাহ্য মণ্ডলে দেবং পূর্বোক্তবিধিনা হর।
পূজায়েদ্ গন্ধপুষ্পাদ্যৈরুপচারৈমহেশ্বর।।
পূজয়িত্বা জপেন্মন্ত্রং শতমষ্টোত্তরং নরঃ।
এবং যঃ কুরুতে রুদ্র চক্ৰস্যর্চনমুত্তমম্ ॥ সর্বরোগবিনিম্মুক্তো বিষ্ণুলোকং সমাপ্নুয়াৎ। 
এতৎ স্তোত্রং জপেৎ পশ্চাৎ সৰ্বব্যাধিবিনাশনম্ ॥
( গরুড়পুরাণ: পূর্বখণ্ড,৩৩. ৫-৭ )

"এরপর মণ্ডলমধ্যে সুদর্শনদেবকে আবাহন করে পূৰ্ব্বোক্তবিধানে গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ প্রভৃতি বিবিধ উপচারে পূজা করবে। সাধক পূজান্তে মূলমন্ত্র অষ্টোত্তরশত জপ করবে। হে রুদ্র! যে সাধক এই প্রকারে সুদর্শনচক্রের পূজা করে, সে ইহকালে সর্বরোগ হতে মুক্ত হয় এবং অন্তকালে বিষ্ণুলোক লাভ করে থাকে। পূজান্তে পশ্চাদুক্ত স্তোত্র পাঠ করবে। এই সুদর্শনস্তোত্র পাঠে সাধকের সর্বপ্রকার ব্যাধির বিনাশ ঘটে।"

গরুড়পুরাণে সুদর্শনস্তোত্রে সুদর্শনচক্রের শান্ত এবং রুদ্র উভয় রূপই বর্ণিত হয়েছে। স্তোত্রে বর্ণিত হয়েছে, সুদর্শনদেব দৈত্যদিগের সম্মুখে ভয়ংকর উগ্রমূর্তিতে এবং শান্তশীল দেবগণের সম্মুখে সৌম্যমূর্তিতে বিরাজ করেন । তিনি জগতের চক্ষুঃস্বরূপ এবং সংসারভয়বিনাশকারী। তিনি শুধু শ্রীবিষ্ণু বা শ্রীসূর্যের স্বরূপ নয়, তিনি মঙ্গলময় শিবস্বরূপও। তিনি গ্রহদিগেরও নিয়ন্ত্রক গ্রহাধিপতি। তিনি কালস্বরূপ ও ভীমরূপী মৃত্যুস্বরূপ। তিনি শরণাগত ভক্তবৃন্দের রক্ষক। তিনি জগতের সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়কারী; অর্থাৎ সুদর্শন স্বয়ং পরমেশ্বরের মূর্তি। তাই পরমেশ্বরকে সুদর্শনচক্ররূপেও পূজা করা যায়।

নমঃ সুদর্শনায়ৈব সহস্রাদিত্যবর্চসে ।
জ্বালামালাপ্রদীপ্তায় সহস্রারায় চক্ষুষে ।।
সর্বদুষ্টবিনাশায় সর্বপাতকমর্দ্দিনে ।
সুচক্রায় বিচক্রায় সর্বমন্ত্রবিভেদিনে ।।
প্রসবিত্রে জগদ্ধাত্রে জগদ্বিধ্বংসিনে নমঃ ।
শর্মদায় চ দেবানাং দুষ্টাসুরবিনাশিনে ।।
উগ্রায় চৈব সৌম্যায় চণ্ডায় চ নমো নমঃ ।
নমশ্চক্ষুঃস্বরূপায় সংসারভয়ভেদিনে ।।
মায়াপঞ্জরভেত্রে চ শিবায় চ নমো নমঃ ।
গ্রহাতিগ্রহরূপায় গ্রহাণাং পতয়ে নমঃ ।।
কালায় মৃত্যবে চৈব ভীমায় চ নমো নমঃ ।
ভক্তানুগ্রহদাত্রে চ ভক্তগোপ্তে নমো নমঃ ।।
বিষ্ণুরূপায় শান্তায় চায়ুধানাং ধরায় চ ।
বিষ্ণুশস্ত্রায় চক্রায় নমো ভূয়ো নমো নমঃ ।।
ইতি স্ত্রোত্রং মহাপুণ্যং চক্রস্য তব কীর্ত্তিতম্‌ ।
যঃ পঠেৎ পরয়া ভক্ত্যা বিষ্ণুলোকং স গচ্ছতি ।।
( গরুড়পুরাণ: পূর্বখণ্ড,৩৩. ৯-১৫ )

"সহস্র সূর্যতুল্য তেজোবিশিষ্ট সুদর্শনচক্রকে নমস্কার ।হে সুদর্শন! তোমার স্বীয় কিরণজালে দিগন্ত ব্যাপ্ত হয়েছে । তুমি সহস্র অরবিশিষ্ট ও চক্ষুঃস্বরূপ , তোমাকে নমস্কার। হে সুদর্শনচক্র ! তুমি সর্বদুষ্টবিনাশ করে বিবিধ পাপ নিবারণ কর। তুমি সুচক্র ও বিচক্রস্বরূপ , তোমার থেকেই সর্বপ্রকার মন্ত্র প্রকাশিত হয়েছে । তুমি জগতের সৃষ্টি- স্থিতি-প্রলয়কারী, তোমাকে নমস্কার। তুমি লোকপালনার্থ দুষ্ট অসুরদিগকে বিনাশ কর। তুমি দুষ্ট দৈত্যদিগের সম্মুখে ভয়ংকর উগ্রমূর্তিতে এবং শান্তশীল দেবগণের সম্মুখে সৌম্যমূর্তিতে বিরাজ কর । তুমি চণ্ডমূর্তি, জগতের চক্ষুঃস্বরূপ ও সংসারভয়বিনাশকারী তোমাকে নমস্কার । 

তুমি মায়া পঞ্জর ভেদ কর , তুমি শিবস্বরূপ তোমাকে নমস্কার । তুমি গ্রহদিগেরও গ্রহস্বরূপ এবং গ্রহাধিপতি ; তোমাকে নমস্কার । তুমি কালস্বরূপ, মৃত্যুস্বরূপ ও ভীমরূপী , তোমাকে নমস্কার। তুমি ভক্তবৃন্দের প্রতি অনুগ্রহদানে তাহদেরকে রক্ষা করে থাক, তোমাকে নমস্কার। তুমি বিষ্ণুরূপী, শান্ত ও আয়ুধধারী। তুমি বিষ্ণুর প্রধান শস্ত্র ; তোমাকে বারংবার নমস্কার। 

এই মহাপুণ্যময় সুদর্শনস্তোত্র বর্ণিত হল। যে সাধক পরমভক্তি সহকারে এই স্তব পাঠ করে, সে অন্তকালে বিষ্ণুলোক প্রাপ্ত হয়।" 


সুদর্শনচক্রসহ দেবদেবীদের হাতে ধারণকৃত অস্ত্র-শস্ত্র প্রসঙ্গে স্বামী প্রণবানন্দ মহারাজের একটি তেজদীপ্ত উক্তি রয়েছে। তিনি বলেছেন:

“হিন্দু! তুমি কি জান না-তুমি শক্তির পূজক, শক্তির উপাসক ? তােমার সেই শক্তির সাধনা কোথায় ? শিবের হাতে ত্রিশূল, তাহা দেখিয়া তুমি কী চিন্তা করিবে? শ্রীকৃষ্ণের হাতে সুদর্শন, তাহা দেখিয়া তুমি কী ভাবনা ভাবিবে ? কালীর হাতে রক্তাক্ত খড়গ, দুর্গার হাতে দশপ্রহরণ, তাহা দেখিয়া তুমি কি শিক্ষা লাভ করিবে ? এই মহাশক্তির সাধনা করিয়া মানুষ দুর্বল হইতে পারে কি ? একবার ধীর স্থির হইয়া চিন্তা কর।"

স্বামী প্রণবানন্দ মহারাজ বর্তমানের ভীত আত্মকেন্দ্রিক হিন্দু সম্প্রদায়কে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, হিন্দু একমাত্র শক্তির পূজক এবং শক্তির উপাসক। নিজেদের প্রকৃত স্বরূপ না চেনার কারণেই আমরা আজ আমাদের পুরনো হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনতে পারছি না। মহাশক্তির সাধনা করে কোন জাতি কখনো দুর্বল হয় না এবং হতে পারে না। ভগবান শ্রীবিষ্ণুর পূজায় অষ্ট দিশাতে সুদর্শন চক্রসহ পাঞ্চজন্য শঙ্খ, কৌমদকী গদা, খড়ড়্গ, বাণ, ধনুক, হল, মূসলাদি  অষ্টআয়ুধের পূজার নির্দেশনা শ্রীমদ্ভাগবতের একাদশ স্কন্ধেও রয়েছে। অর্থাৎ দেবদেবীদের সাথে তাঁদের আয়ুধের পূজা প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত। 

সুদর্শনং পাঞ্চজন্যং গদাসীষুধনুর্হলান্। 
মুসলং কৌস্তুভং মালাং শ্রীবৎসং চানুপূজয়েৎ৷৷
(শ্রীমদ্ভাগবত:১১.২৭.২৭)

"সুদর্শন চক্র, পাঞ্চজন্য শঙ্খ, কৌমদকী গদা, খড়ড়্গ, বাণ, ধনুক, হল, মূসল—এই অষ্টআয়ুধের পূজা অষ্ট দিশাতে করবে এবং বক্ষঃস্থলে যথাস্থানে কৌস্তুভমণি বৈজয়ন্তীমালা ও শ্রীবৎস চিহ্নর পূজা করবে৷"

কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী 
সহকারী অধ্যাপক, 
সংস্কৃত বিভাগ, 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted