বুদ্ধি জ্ঞান হওয়ার পর থেকে দেখছি বিশ্বকাপ ফুটবল এলেই দেশের মানুষ মোটামুটি দুটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে, এক দল ব্রাজিল অন্য দল আর্জেন্টিনা।
এর বাইরেও জার্মান ফ্রান্স ইতালি পর্তুগাল স্পেনের মোটামুটি সাপোর্টার রয়েছে।
চার বছর পর পর বিশ্বকাপ ফুটবল আসা মানেই কোন একটা গ্রামে আগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় যেরকম উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করতো, এই খেলাকে কেন্দ্র করে সারা দেশ জুড়ে সেই রকম উৎসবমুখর পরিবেশই বিরাজ করে।
এই উৎসবের চরিত্র ছিল সার্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক এবং অবশ্যই আন্তর্জাতিক। দেশের মানুষের এর মধ্যে কখনোই সাম্প্রদায়িকতা খুঁজতে যায়নি।
নেইমারের ধর্ম কি, মেসি নামাজ পড়ে কিনা, রোনালদো মদ খায় কিনা, এসব কিছু চিন্তা করার প্রয়োজন মানুষের আগে কখনোই ছিল না।
কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন, কেননা সারাদেশ জুড়ে ইসলাম প্রচার প্রসারের স্বর্ণযুগ অতিবাহিত হচ্ছে। সেই কারণে বিশ্বকাপ ফুটবলের মতো অনুষ্ঠান ও বিবেচনা হতে শুরু করেছে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির আঙ্গিকে।
ছোট্ট একটা উদাহরণ দিই।
বোধকরি এসব আপনারাও সকলে জানেন।
গতকাল সন্ধ্যায় দোকানে বসে এক লোক তার এন্ড্রয়েড ফোনে দেশের কোথায় যেন ব্রাজিল সমর্থকরা মোটরসাইকেল শোডাউন করেছে, তাই বলছিলো।
শোনা মাত্র এক লোক বিশ্রী ভাবে রেগে উঠল।
দাঁত খিচিয়ে সে বলতে থাকলেও কোনো মানুষের যাত ব্রাজিলের সাপোর্ট করে?
এন্ড্রয়েড হাতে সেই লোক যিনি খবর দিচ্ছিলেন, সে বেচারা তো হতবাক। অন্যরাও দাড়িওয়ালা মধ্যবয়সী সেই লোকটার মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
প্রথমে ভাবা হয়েছিল তিনি বোধ হয় আর্জেন্টিনার সাপোর্টার, কিন্তু ঘটনা তেমন না।
দাঁত খেচানো লোক আবার বলা শুরু করেছেন।
বলছে আপনারা জানেন, ব্রাজিলে কোথাও আযান পর্যন্ত হতে দেয় না, কোন মুসলমানের বাচ্চা এদের সাপোর্ট করতে পারেনা।
কেউ একজন আর্জেন্টিনার কথা বলল, হয়তো ভালো কিছু শুনতে পাবে এই আশায়।
কিন্তু সে গুড়ে বালি।
সে লোক বলছে ওরা সব ইহুদী-নাছারার জাত ওখানেও একই অবস্থা।
সে লোকের ধারণা হলো মোহাম্মদ সালাহ এ বিশ্বের সবথেকে ভালো ফুটবলার।
অবশ্য আরেকজন ভালো ফুটবলার ও আছে, তার নাম হলো করিম বেনজমা।
বোঝেন অবস্থা! ইসলামী স্বর্ণযুগ দেখেন দেশকে কোথায় টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
পরে সেই লোকের পরিচয় জানলাম। এক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তিনি।
খুব সুইট না?
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................