হিন্দু-মুসলিমের সেকুলারিজম এর সমীকরণটা হলো এই রকম।

সেকুলারিজম নিয়ে সাড়া পৃথিবীজোড়ে শুধুমাত্র ভারত আর বাংলাদেশেই কথা বলতে শুনি। তাও আবার শুধুমাত্র হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যেই। আমার দৃষ্টিতে হিন্দু-মুসলিমের সেকুলারিজম এর সমীকরণটা হলো এই রকম :

১) হিন্দু মেয়ে + মুসলিম ছেলের বিয়ে = মেয়েটাকে মুসলিম হতেই হবে

২) হিন্দু ছেলে + মুসলিম মেয়ের বিয়ে = ছেলেটাকে মুসলিম হতেই হবে

৩) হিন্দু পরিবারের নাস্তিক মেয়ে + মুসলিম পরিবারের আস্তিক ছেলের বিয়ে = সন্তানরা সব মুসলিমই হবে 

৪) হিন্দু পরিবারের নাস্তিক ছেলে + মুসলিম পরিবারের আস্তিক মেয়ের বিয়ে = সন্তানরা সব মুসলিমই হবে

৫) হিন্দু পরিবারের আস্তিক মেয়ে + মুসলিম পরিবারের নাস্তিক ছেলের বিয়ে = সন্তানরা সব মুসলিমই হবে

৬) হিন্দু পরিবারের আস্তিক ছেলে + মুসলিম পরিবারের নাস্তিক মেয়ের বিয়ে = সন্তানরা সব মুসলিমই হবে  

৭) হিন্দু সেকুলার পরিবার = গরু খেয়ে প্রমান করতে হবে 

৮) মুসলিম সেকুলার পরিবার = মুসলিমরা যেহেতু সেকুলারিজম-এ বিশ্বাস করেনা অতএব হারাম খেয়ে তা প্রমান করতে হয়না। 

৯) হিন্দু সেকুলার নারী-পুরুষ = ধর্মে বিশ্বাস তো নেই-ই, বরং নিজের ধর্মকে যত পারে নিন্দা করে 

১০) মুসলিম সেকুলার নারী-পুরুষ = ধর্ম নিয়ে কথা বলে কেন অশান্তি করবে বা নিজ ধর্মকে খাটো করবে? 

১১) হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠান = মুসলিমরা ধর্মীয় কারণে বিধর্মীকে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারেনা 

১২) মুসলিম ধর্মীয় অনুষ্ঠান = হিন্দুরা প্রাণখোলে শুভেচ্ছা বিনিময় করে 

১৩) ভারতে সেকুলারিজম = মুসলিমরা প্রেসিডেন্ট এমনকি পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যন্ত হতে পারবেন 

১৪) বাংলাদেশে সেকুলারিজম = কোনো সংখ্যালঘুকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো যাবে না 

১৫) ভারতে সেকুলারিজম = হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করে হিন্দু পরিবারের সদস্যদেরকে হত্যা করে সেখানে মসজিদ বানিয়ে দেয়া হবে রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায় 

১৬) বাংলাদেশে সেকুলারিজম = সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি জোর দখল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংশ, মেয়েদেরকে ধর্ষণ, জোর করে মুসলিম বানানো, স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রতারণা করে গরুর মাংশ খাওয়ানো এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সেগুলোর কোনো বিচার না করা।   

১৭) তসলিমা নাসরিনের সেকুলারিজম = ভারতের তীব্র সমালোচনা করলেও ভারতই তাঁকে আশ্রয় এবং নিরাপত্যা দিচ্ছে। অথচ বাংলাদেশের সেকুলাররা তাঁকে তাড়িয়ে বেঁচেছে। 

১৮) ভারতের সেকুলার সেলিব্রিটিরা গোমাংস নিয়ে উদ্ভূত বিতর্কের কারণে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ফিরিয়ে দিলেও বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত সংখ্যালঘুদের উপর চরম অত্যাচার উত্পীড়ন করা হলেও কোনো সেকুলার সেলিব্রিটিরা টু শব্দটিও করেন না। 

১৯) ভারতে বিজেপি হিন্দু মৌলবাদী দল হলেও সেই দলে প্রচুর মুসলিম নেতা-নেত্রী আছেন অথচ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সেকুলার দল হলেও তেমন কোনো সংখ্যালঘু দলে কোনো গুরুত্তপূর্ণ পদ পান না। 

২০) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সেকুলার দল হলেও দেশ জুড়ে ৫০০ মসজিদ বানানোর প্রতিশ্রুতি দেন প্রধান মন্ত্রী অথচ সংখ্যালঘুদের জন্যে কোনো উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রুতিতো নেই-ই, বরং জবরদস্তি করে যারা সংখ্যালঘুদেরকে দেশছাড়া করছে তাদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।       

২১) ভারত ও বাংলাদেশে হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে সেকুলারিজম এবং কমুনিজম এর অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্যগুলোর মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লোকানো উদ্দেশ্যটা ছিলো ধীরে ধীরে হিন্দুগুলোকে ছলে বলে কৌশলে মুসলিম বানিয়ে ছেড়ে দেয়া।
 
ভারতে নরেন্দ্র মোদীর যুদ্ধটা সেকুলারিজম এবং কমুনিজম এর সেইসব লোকানো উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে হওয়াতেই এতো হৈচৈ। তবে সময়ই সব বলে দেবে আমাদেরকে কখন কি করতে হবে।

বিঃ দ্রঃ আজ থেকে সাত বছর আগে (০১/১২/২০১৫ইং তারিখে) যা যা বলেছিলাম, তার কি কোথাও কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে এই সাত বছর পরের আজকের এই দিনে (০১/১২/২০২২)? সৎ সাহস থাকলে উপযুক্ত যুক্তি দিয়ে মন্তব্য করুন।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted