আলেম ওলামাদের আয় রোজগার হচ্ছে ইসলাম অনুযায়ী একশো ভাগ হারাম

আলেম ওলামাদের আয় রোজগার হচ্ছে ইসলাম অনুযায়ী একশো ভাগ হারাম! অর্থ্যাত যারা দিনরাত ওয়াজে মসজিদে আপনাদের হারাম হালাল নিয়ে জ্ঞান দিয়ে যান তাদের প্রতিটি পয়সাই হচ্ছে নাজায়েজ! সুরা বাকারার ৪১ নং আয়াতে বলা হয়েছে ‘তোমরা আমার আয়াত সমূহের পরিবর্তে তুচ্ছ বিনিময় গ্রহণ করো না এবং আমাকে ভয় কর’।

#মাওলানা সা’দ কান্ধলভি তাবলীগ জামাতের একটি বয়ানে ভারতের একটি মসজিদে বলেছিলেন, হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, “হে কুরআন শিখানেওয়ালা, হে দ্বীন শিখানেওয়ালা তোমরা এর (কুরআন শিখানোর) বিনিময়ে মূল গ্রহন করো না, অন্যথায় নীচ (কামিনা) ব্যাক্তিরা তোমাদের আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে”।



#এই বয়ান দেয়ার পর ‘হুজুর’ পেশার লোকজনের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। রীতিমত পেটে লাত্থি দেয়ার মত কথা। এতকাল মাদ্রাসায় যা শিখে এসেছে কাল যদি সেটা আর বেচতে না পারে তাহলে এদেরকে কেউ গরুর রাখালের কাজও রাখবে না। মূলত মাদ্রাসা শিক্ষা হচ্ছে কুরআন হাদিসের শিক্ষা। এগুলি দিয়ে পৃথিবীর কোন কাজে আসে না। পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে অর্থের প্রয়োজন। সেই অর্থ আসবে কাজ করলে। ফলে সংকট এখানে বহুমুখী। পৃথিবীতে কাজ করে অর্থ অর্জনের চেয়ে নামাজ পড়িয়ে বেতন নেওয়া খুব সহজ। সাধারণ মানুষ নামাজ পড়ে তার জন্য তারা পয়সা পায় না। নামাজ তাদের পড়তেই হবে কারণ সেটা ধর্মীয় বিধান। সেই একই কাজ করে একজন বেতন পাচ্ছে! মানে সে কোন কাজ না করেই অর্থ উপার্জন করছে। পৃথিবীতে সমস্ত ধর্মের পুরোহিতদের একই কাজ। কোন রকম কাজকর্ম না করে তারা মানুষকে বোকা বানিয়ে পয়সা নেন। মাওলানা সা’দ ‘ধর্ম ব্যবসায়ী’ নন। তার মানে তিনি ধর্ম প্রচার করে পয়সা নেন না। এটুকু বাদে এই লোকও পাড় জিহাদী। কট্টর ইসলামিক খিলাফতের প্রচারক। ভারতে এই সা’দরা বিষফোড়ার মত। এরা বসে আছে কবে ইমাম মাহদী এসে গজওয়াতুল হিন্দ চালাবে আর হিন্দুদের বন্দি করে ইসলামী খিলাফত শুরু হবে...। তবে আপাতত কুরআন শিক্ষা দিয়ে অর্থ গ্রহণ করা যে হারাম’ আজকের আলোচনা সেখানেই রাখি।
মাওলানা সা’দের মূল উর্দু বয়ানের লিংকঃ
https://youtu.be/Uq0M8C5w9P8

#তাবলীগ জামাত দুইভাগ হয়ে যায় মাওলানা সা’দের বক্ত্যের ঝড়ে। মাওলানা যোবায়ের ও মাওলানা সা’দ এই দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দুই দল লাঠিশোঠা নিয়ে একে অপরকে রক্তাক্ত করতে কাকরাইল মসজিদ রণক্ষেত্রে পরিণত করে ফেলে। মাওলানা যোবায়েরের রুটিরুজি হচ্ছে মাদ্রাসা মসজিদ থেকে। এই যোবায়েরদের উত্পাদন যেখান থেকে হয় সেই কারখানার হেড অফিস হচ্ছে দারুল উলূম দেওবন্দ(ইন্ডিয়া)। যারা নাকি উপমহাদেশের মুসলমানদের ধর্মীয় ফতোয়া দিয়ে পরিচালিত করে। এরা আফগানিস্থানে বর্তমানে ক্ষমতায় আছে যারা (যাদের নাম নিলে ফেইসবুক অদ্ভূত কারণে ব্লক করে দেয়!) তারাও দারুল উলূম দেওবন্দের অনুসারী। সেই দেওবন্দের এই বিষয়ে ফতোয়া কি ছিলো দেখুন-

“পারিশ্রমিক নিয়ে দিন শেখানো দ্বীন বিক্রির নামান্তর। কোরআনে কারীম শিখিয়ে পারিশ্রমিক গ্রহণকারীর আগে যেনাকারীরা (স্ত্রীবাচক না পুরুষবাচক তা স্পষ্ট করা হয়নি) জান্নাতে যাবে।”

-২৩ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে প্রকাশিত
দারুল উলূম দেওবন্দের প্রথম মাওকিফ থেকে সংগৃহীত-
(লিঙ্কঃhttp://www.darulifta-deoband.com/home/ur/Dawah–Tableeg/147286)

#অর্থ্যাত যে দেওবন্দ ‘হুজুর’ জন্মের কারখানা সেখান থেকেই এই ফতোয়া দেওয়া হয়েছিলো। যোবায়েরসহ ৯৯ পার্সেন্ট হুজুর মসজিদ মাদ্রাসায় পড়িয়ে, বাসাবাড়িতে কুরআন খতম করে, মিলাদ পড়িয়ে, ঝারফুঁক করে অর্থ গ্রহণ করে তা এই ফতোয়া অনুযায়ী হারাম! অথচ দেওবন্দ নিজেই তো হারামের কারখানা! সেখানে অর্থের বিনিময়েই তো লেখাপড়া চলে? সেখানে ইমাম বানানোর সার্টিফিকেট দেয়া হয় না?

#নামাজ তথা ইবাদত-বন্দেগীর বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা নাজায়েজ তা মাসায়িলে মা’আরিফুল কুরআনে বিস্তারিতভাবে লেখা আছে। তবে একই গ্রন্থে অর্থের বিনিময়ে কুরআন শিক্ষা ও নামাজ পড়ানোকে বৈধ বলেছেন “অপারগ অবস্থায়”। বলা হয়েছে পূর্ববর্তী ইমামগণ কুরআনের বিনিময়ে অর্থগ্রহণ ও নামাজ পড়িয়ে অর্থ গ্রহণকে হারাম বলেছেন কিন্তু পরবর্তীকালের ফেক্কাহবিদগণ “অপারগ অবস্থায়” একে হালাল বলেছেন। অর্থ্যাত নিতান্তই দুর্বাস্থায় পড়া কোন লোকের জন্য এটি হালাল করা হয়েছে। এই মতামত যে কুরআনের কোন রেফারেন্স থেকে নয় বলাই বাহুল্য। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ইমামরা বসে যে সিদ্ধান্ত নেন এটি সেরকম একটি সিদ্ধান্ত। তাহলে এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে এখন যারা ‘হুজুর পেশায়’ এসে ঠেকে গেছেন তাদের তো রিকশা চালানো ছাড়া গতি থাকবে না। তাদের কথা বিবেচনা করে “অপারগ অবস্থায়” বর্তমানে এটাকে বৈধ বলে মেনে নিলাম। কিন্তু ভবিষ্যতে আরো ছেলেপেলেকে কেন আমরা এরকম “অপারগ অবস্থায়” এনে ফেলছি? এটা তো কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে? তার মানে মাদ্রাসাগুলিই সবার আগে বন্ধ করা উচিত? অথবা অর্থের বিনিময়ে পড়ানো বন্ধ করতে হবে। সেখানে বলেই দেয়া হবে এখান থেকে শিখে কেউ মসজিদে নামাড় পড়াও বা মিলাদ পড়াও কোন টাকা পয়সা নিতে পারবে না। আমরাও কোন বেতন বা ডোনেশন নিবো না। অর্থ্যাত এই উপমহাদেশ জুড়ে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠা মাদ্রাসাগুলি তখন বন্ধ হয়ে যাবে। কেবলমাত্র সেইসব সংসার বিবাগী সাধু পুরুষরাই কোন ওস্তাদের কাছে এলেম নিবে অন্যদের ধর্মীয় জ্ঞান দেয়ার জন্য। এখন যা চলছে সেটি কুরআনের আয়াত ও হাদিসের থেকে পরিস্কার হুজুররা হারাম অপার্জনে আছেন। যারা ৩৬৫ দিন ওয়াজ করে বেড়ান, হেলিকপ্টারে করে ওয়াজে যান, এক লাখের নিজে ওয়াজ করে না তারা কি “অপারগ অবস্থায়” আছেন? থেকে থাকলে মাদ্রাসা খুলে কেন নতুন করে লক্ষ লক্ষ বাচ্চাদের ভবিষ্যতের জন্য “অপারগ অবস্থায়” এনে ফেলছেন?

#তবে ইসলামে ভেজালের শেষ নেই! বুখারী ও মিশকাত শরীফের একটি হাদিস সমস্ত ঝারফুঁক তাবিজ কবজ দেয়া হুজুরদের রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করছে। যেসব ‘মর্ডান হুজুর’ ও মডারেট মুসলমান পানিপরা তাবিজকবজ দেয়াকে ভন্ডামী বলেন তাদের মুখবন্ধ করতে এই হাদিসটিই যথেষ্ঠ। এমনকি যারা মাদ্রাসা মসজিদে চাকরি করে পয়সা নেন তাদেরও মুখরক্ষা করে আছে হাদিসটি। এক বেদুইনকে সাপে কাটলে কয়েকজন সাহাবী বলে তারা তাদের জানা কিছু সুরা পড়ে ঝারফুঁক করে যদি সারিয়ে তুলতে পারে তাহলে তাদেরকে চারটি বকরি দিতে হবে। সেই কথামত ঝারফুঁক করে (ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে) লোকটিকে সারিয়ে তুললে তারা চারটি বকরি নিয়ে বাড়ি ফেরে। সেকথা আমাদের দয়াল নবী জানতে পারলে কোন মন্তব্য না করে তার জন্য একটি বকরি হাদিয়া রেখে যাওয়ার কথা বলে। (বুখারী হা/৫০০৭; মিশকাত হা/২৯৮৫, ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়, ১৪ অনুচ্ছেদ)।

#এবার বলেন কাকে বিশ্বাস করবেন! খোদ আমাদের নবী সাহেবই ঝারফুঁকের ভাগ নিয়েছেন! সুরা বাকারার ৪১ আয়াতকে পুরোপুরি লঙ্ঘন করেছেন। ইসলামের এইসব ভেজাল এতবেশি যে সেসবের ফাঁকতল দিয়ে ফতোয়া বের করে যে কেউ যা খুশি তাই করতে পারে। জার্মানিতে ‘মুতা বিয়ের’ রেফারেন্স থেকে মুসলমানদের জন্য ‘হালাল পতিতালয়ে পর্যন্ত চালু হয়েছে! কই যাইবেন বলেন?

#সুষুপ্ত #পাঠক #Quran #Hadith #Imam #Mosque #Madrasa

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted