বাংলাদেশের কোন কাগজের নোটে মন্দিরের ছবি নেই কেন??

বাংলাদেশের কোন কাগজের নোটে মন্দিরের ছবি নেই। তবে মসজিদের ছবি আছে বিস্তর। পুরাকীর্তি হিসেবে এই মন্দিরগুলোর ছবি নোটে আনা হয়নি কেন? দেশ স্বাধীনের পর ৭৫ সাল পর্যন্ত তো দেশে পাকিস্তানী প্রেতাত্মা ছিলো না আপনারা বলেন। তাহলে তখনো কেন একটি মন্দিরের ছবি রাখা হয়নি?

শিল্পবোধ থেকে মানুষ মন্দির মসজিদ দেখেতে যায়। ধর্মহীন হয়েও তাই ষাট গুম্বুজ মসজিদ যেমন দেখতে গিয়েছি তেমনি কান্তি জিউর মন্দির দেখতে গেছি। বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি বাংলাদেশের নোটে আছে কিন্তু দিনাজপুরের কান্তি জিউর মন্দিরের ছবি নেই। অথচ শিল্পমান যদি চিন্তা করেন তাহলে কান্তি জিউর মন্দির আপনার চোখকে ধাঁধিয়ে দিবে। আপনি হা হয়ে চেয়ে দেখবেন মন্দিরের গায়ের নকশাগুলোর দিকে।

এই দেশের মাটি একশো হাত নিচে আজো মূর্তি পাওয়া যাবে। এই দেশের দেড়শো দুইশো বছরের পুরোনো সমস্ত স্কুলগুলো বানিয়েছিল হিন্দুরা। এই দেশের মাটি ‘হিন্দু’। এই হিন্দু বলতে আমি প্রচলিত হিন্দু ধর্মকে বুঝাইনি। সংস্কৃতিকে বুঝিয়ে যার সঙ্গে ধর্ম মিশে আছে সত্য কিন্তু এই মাটির সংস্কৃতি তো হিন্দুই। তাহলে আমাকে বুঝান সিলেটকে কেন ৩৬০ আউলিয়ার দেশ বলা হবে? চট্টগ্রামের ভাষা কি প্রমাণ করে না এটি আরাকান সংস্কৃতি বহন করে চলেছে? তাহলে চট্টগ্রামকে বারো আউলিয়ার দেশ কেন বলা হবে? বিদেশী এইসব আউলিয়া দরবেশদের পরিচয়ে কেমন করে বাংলা নিজেকে মুসলিম বাংলা করল সে ইতিহাস বলাটাই এখন ‘মুসলিম বিদ্বেষ’!

হযরত শাহজালাল, শাহ আমানত এরকম আউলিয়ার নামে বিমানবন্দরের নামকরণ রাজনীতি তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু পাবলিক যে এইসব নাম পরিবর্তন করতে চাইলে জঙ্গি হয়ে উঠবে সেটা কিন্তু রাজনীতি নয়। তার নাম ‘মুসলমানিত্ববাদ’। বাংলাদেশ ৭২ থেকে ৭৫ সালেও মুসলানিত্ববাদের কারণেই কোন নোটে একটি মন্দিরের ছবিও রাখা হয়নি। এখন তো সেটা আরো জঘন্ন ঘিনঘিন আকারে বেড়ে উঠেছে। পুরো জাতি কট্টর মুসলমানিত্ববাদী হয়ে গেছে।

©সুষুপ্ত পাঠক

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted