#রাবনের দশ মাথা আসলে কিসের প্রতীক ?
#Sourav_Bhattacharjee,
#রাবনের দশ মাথা প্রতীকী, এটা একই ব্যক্তির ১০ জন মানুষের বিদ্যা বুদ্ধির ধারণ ক্ষমতার প্রতীক। রাবন যে অসাধারণ মেধাবী ছিলো, তার প্রমাণ লুকিয়ে আছে “স্বর্ণ লঙ্কা”, এই শব্দগুচ্ছের মধ্যে। সেই সময় আর্যাবর্তের এমন কোনো রাষ্ট্র বা রাজ্য ছিলো না যা উন্নতির দিক থেকে লঙ্কার সমান ছিলো, যে কারণে লঙ্কাকে বলা হতো স্বর্ণ লঙ্কা।
আর সনাতন ধর্মে অষ্টসিদ্ধি বলে একটা ব্যাপার আছে, যার এটা প্রাপ্তি ঘটে বা যে এটা অর্জন করতে পারে, সে নিজের ইচ্ছামতো নিজেকে বড় করতে পারে বা ছোট করতে পারে এবং যেখানে খুশি সেখানে মূহুর্তের মধ্যে উপস্থিত হতে পারে। বর্তমানের বাস্তবতায়, যখন সেসব বিষয়ের আর চর্চা নেই, তখন এগুলোকে শুধু আপনার নয়, অনেকের কাছেই অবাস্তব বা কাল্পনিক মনে হয় বা হবে। কিন্তু একটা সময় এগুলো বাস্তব ছিলো, যেমন মন্ত্র দ্বারা ধনুকে তীর আনা, যাকে বলে শরসন্ধান। কিন্তু বর্তমানে সেই জ্ঞান লুপ্ত হয়ে গেছে বলে কারো পক্ষে আর মন্ত্র দ্বারা ধনুকে তীর আনা সম্ভব নয়, যেকারণে এটাকে এখন কাল্পনিক বলে মনে হয়। একইভাবে একটা তীর নিক্ষেপ করে সেগুলোকে ধনুকধারীর ইচ্ছা মতো বহুতে পরিণত করা যেতো, বর্তমানে কারো পক্ষে সেটা করা সম্ভব নয় বলে এটাকেও কল্পনা বলে মনে হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এগুলো কল্পনা নয়, এগুলো একসময় বাস্তব ছিলো।
এছাড়াও আরও কিছু বিষয় একসময় মানুষের কাছে কল্পনা ছিলো, যেগুলো বাস্তবে পরিণত হয়েছে, যেমন- কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ, সঞ্জয় হস্তিনাপুরের প্রাসাদে বসে দেখেছিলো এবং ধৃতরাষ্ট্রকে তা বর্ণনা করেছিলো, এক সময়ের এই কল্পনা বর্তমানে লাইভ টিভি সম্প্রচারের মাধ্যমে বাস্তবে পরিণত হয়েছে।
আবার গান্ধারীর একশ এক সন্তান, তার গর্ভের বাইরে কৃত্রিম পরিবেশে পূর্ণ মানব সন্তানে পরিণত হয়েছিলো এবং মন্ত্রপূত কলস থেকে বের হয়ে এসেছিলো, এটাও এক সময় কল্পনা থাকলেও, বর্তমানে আমেরিকার বিজ্ঞানীরা মাতৃগর্ভের বাইরে কৃত্রিম গর্ভ বানিয়ে সেখানে ভ্রুণকে বড় করে পূর্ণ মানব শিশুর জন্ম দিচ্ছেন।
সুতরাং সনাতন ধর্মের অনেক বিষয়, যা এক সময় মানুষের কাছে কল্পনা মনে হতো, সেগুলো পরে বাস্তবে পরিণত হয়েছে। সেইরকমই একটি বিষয় হলো- হুনুমানের পর্বতকে উঠিয়ে আনা। রামায়ণের কাহিনী অনুসারে এই কার্য করার পূর্বে হুনুমান নিজের শরীরকে বিরাট বানিয়ে ফেলে, যা ঐ পর্বতের চেয়েও বহুগুনে বড় ছিলো, ফলে সে আনায়াসেই নিজের হাতের তালুতে ঐ পর্বতকে নিতে পারে এবং মূহুর্তের মধ্যে সে আকাশে উড়ে লঙ্কায় পৌঁছতে পারে।
কোনো ভারী বস্তুর আকাশে উড়াও তো এক সময় কল্পনাই ছিলো, কিন্তু সেটা কি বর্তমানে বাস্তব হয় নি ? একটি হেলিকপ্টার বা একটি বিমানের ওজন কত, সে সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণা আছে ? এত ভারী এক একটি বস্তুও এখন আকাশে উড়ে বেড়ায়, যেটা মাত্র ১০০ বছর আগের লোকের কাছেও ছিলো কল্পনা, সেটা কি কখনও ভেবে দেখেছেন ? আবার বাস্তবে মনে হবে মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে উপেক্ষা করে কোনো মানুষের পক্ষে শুন্যে ভেসে বেড়ানো অসম্ভব এবং এটি কাল্পনিক, কিন্তু হিমালয় অঞ্চলে এমন সাধু আছে, যারা শুন্যে ভেসে থাকতে পারে, এটা নিয়ে ডিসকভারীর ডকুমেন্টরী আমি নিজে টিভিতে দেখেছি। সুতরাং যে বিষয়কে আপনার কল্পনা মনে হচ্ছে, সেটা বাস্তবে কল্পনা নাও হতে পারে, ঐ বিষয়কে আপনার কল্পনা মনে হচ্ছে; কারণ সেই বিষয়ের বাস্তবিকতা সম্পর্কে আপনি জ্ঞাত নন।
শেষে বলবো- সনাতন ধর্মের যে বিষয়গুলো আপনার কাল্পনিক বলে মনে হবে, ধরে নেবেন সেই বিষয়ে আপনার জানার অভাব আছে, সেটার বাস্তবতার কোনো না কোনো একটি সূত্র অবশ্যই আছে, আমাদেরকে হয় সেই বিষয়গুলো জানতে হবে, না হলে জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
আশা করছি- কাল্পনিক বিষয়টা বাস্তব আকারে আপনাকে বোঝাতে পেরেছি।
জয় সনাতন।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রী কৃষ্ণ 🚩
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................