-আবার আসিবো ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে...
-আবার আসবেন মানে? দেশভাগ করছিলাম তাহলে কি জন্য?
-তুমি কে?
-আমি সলিমুল্লাহ।
-আমাদের বরিশালের নাকি?
-দাদাবাবু বরিশাল আপনাদের না!
-ভোরের কাক হয়ে আসলে তুমি ঠেকাবে কি করে?
-দরকার পড়লে কাককে হিন্দুত্ববাদী র আরএসএস পাখি বানায় দিবো!
-এই দেশকে আমি ভালোবেসেছিলুম। আমার জন্মভূমি।
-হতে পারে। তাতে কি? আপনাদের অমর্ত্য সেন বাবু বলেছেন, দেশভাগের ফলে পূর্ববঙ্গের ভূমি বিন্যাস হইছে।
-ঢাকার নবাব কি জমিদার ছিল না?
-আপনারা আমাদের মুসলমান চাষীদের পাট বেচা টাকায় শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন পড়াবেন তা হবে না!
- নিজেদের কিছু পড়বে তো? সেটা কি?
-সোহরাব রুস্তম। কারবালা...
-একটা পারস্য আর আরেকটা আরবদের। তোমাদের কোনটা?
-হম, তা ঠিক আছে। পড়াবো, আমাদের তৈরি হবে। আহমদ ছফা বলে গেছেন আমাদের নিজস্ব সাহিত্য ভাষা তৈরি হবে।
-হয়েছে?
-হয়নি, হবে।
-তোমাদের সে ভাষা তো পূর্ববঙ্গের ভাষা হবে। তাতে তো হিন্দুরা আছে। তুমি তো বাঙালি মুসলমানদের ভাষার কথা বলছো। তোমাদের নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা তো মুসলমান না। তারা কোন ভাষায় লেখে?
-দাদা প্যাঁচায়েন না। আপনাদের দেশে গিয়ে সেই মুক্তিযুদ্ধের সময় এমআর আখতার বলে আসছে, আপনারা যারা ৪৭, ৬৪, ৬৫ সালে দেশ ছাড়ছেন তাদের ঠাই এই দেশে হবে না!
- বেশ, আমাদের তোমাদের দেশ বলছো। তাহলে নজরুল তো কোলকাতার। তাকে কি করে গ্রহণ করছো?
-উনি আমাদের জাতীয় কবি! মুসলমান!
-তার সঙ্গে বাংলাদেশের কি সম্পর্ক?
-হে হে হে আপনে এখনো নক্ষত্র বুড়ি চাঁদ এইসব নিয়া আছেন । জয়া চ্যাটার্জি, ছফা পড়েন নাই! পড়লে বুঝতেন আমরা নজরুলকে আমাদের মুসলিম লীগ চেতনায় গ্রহণ করেছি!
-জয়া চ্যাটার্জি লিখেছে আমাদের খেদিয়ে ভালো হয়েছে?
-তা লিখে নাই। বলেছে দেশভাগের জন্য হিন্দুরা দায়ী!
-অথচ তুমি দেশভাগের জন্য খুশি। দেশভাগে তোমাদের লাভ হয়েছে?
-হয়েছে।
-আবার বলছো আমরা দায়ী!
-হে হে হে এটাই তেলেসমাতি! দেশভাগের ফলে মুসলমানদের নিজেদের দেশ হয়েছে। এখন আমরা বলতে পারি পশ্চিমবঙ্গের বই বাংলাদেশে আসলে বাল ফেলতে দেশ স্বাধীন করছি!... মাগার দেশভাগের জন্য হিন্দুরা দায়ী হি হি হি...
-রূপসী বাংলার কবিকে বাংলার ভাট ফুল, কলমির গন্ধ মাখা জল থেকে সরাতে পারবে না।
-আমরা এখন সোনার মদিনা চাই। রূপসী বাংলা না!
-এই জল হাওয়ার মানুষ হয়ে তোমরা নিজেদের নিজস্বতার সন্ধান না করলে শিকড়হীন শ্যাওলার মত ভেসে যাবে। আবার রূপসী বাংলায় ফিরে এসো। দেখো ভোরের কাক কুয়াশায় মিলিয়ে যাচ্ছে। ঘুঘুর বুকের সবুজ মাংস, কমলা রঙের রোদ, যে জীবন ফড়িংয়ের তার কাছে ফিরে আসো...
©সুষুপ্ত পাঠক
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................