ইদানীং কিছু যাদবপুরী বিজ্ঞ কন্যাদানে আপত্তি জানাচ্ছে। তাদের মতে কন্যা কোন বস্তু নয় যে তাকে দান করা যাবে। এই বিজ্ঞরা হয়তো কালকে 'জীবনদান' বা 'মতদান' নিয়েও একই আপত্তি তুলবে। কিন্তু এই হঠাৎ বিজ্ঞদের জানা নেই যে বিবাহ একটা সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া আর কন্যা সম্প্রদান তার একটা অংশ বিশেষ।
"ওঁ এতস্যৈ সবস্ত্রায়ৈ সালঙ্কারায়ৈ কন্যায়ৈ নমঃ"
মন্ত্র বলে যে কন্যাকে সম্প্রদান করা হয় সে কতটা অসাধারণ তার বর্ণনা রয়েছে পরবর্তী আচার গ্রন্থিবন্ধনে।
"সাবিত্রী সত্যভামা হিমগিরিতনয়াহুরুন্ধতী জহ্নূকন্যা লোপামুদ্রা সুভদ্রাহদিতি রতি কমলা রুক্মিনী রেবতী চ। রম্ভা মেনা যশোদা সুরূপতিবনিতা কৈটভি বানপুত্রী, সৌভাগ্যং পুত্রলাভং সকলশুভকরং মঙ্গলং বো দিশ্ম।"
হ্যাঁ, কন্যা, যার উৎপত্তি কম ধাতু অর্থাৎ কামনা থেকে, হলো মা-বাবার শ্রেষ্ঠ কামনার ধন তথা কাম্য অভিজ্ঞান। আর সেই ঐশ্বর্যকে আরও মহিমান্বিত করা হয় সে কোন সংস্কৃতির প্রতিনিধি সেই বিবৃতি দ্বারা। সাবিত্রী, সত্যভামা, পার্বতী, অরুন্ধতী সহ অন্যান্য মহীয়সীদের সার্থক উত্তরসূরী এই কন্যাকে দান করার মত উদারতা দাতার থাকতে হয় আর সেই দান গ্রহণ করে, তাকে রক্ষা করার যোগ্যতা গ্রহীতার থাকতে হয়। তাই বলা হয় -
"দূর্বাপুষ্পং ফলঞ্চৈব বস্ত্রং তাম্বুলমেবচ
এভি কন্যা ময়া দত্তা রক্ষণং পোষণং কুরু।"
এই মহার্ঘ দান গ্রহণ করার পর গ্রহীতার যাতে কোন হীনমন্যতা না আসে তাই পরবর্তী মন্ত্রই হচ্ছে
"ওঁ যথেন্দ্রানী মহেন্দ্রস্য; স্বাহা চৈব বিভাবসোঃ। রোহিনী চ যথা চন্দ্রে, দময়ন্তী যথা নলে। যথা বৈশ্রবনেভদ্রা, বশিষ্টে চাপ্যরুন্ধতী। সীতা চ রামচন্দ্রে, গৌরীশঙ্কর এব চ, যথা- নারায়নে লক্ষী স্তথাত্বং ভব ভর্ত্তারি।"
একের পর এক পারফেক্ট কাপলের উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে যে সম্পর্কটা ঠিক কেমন হবে। দান ও গ্রহীতা যাতে পরস্পরের পরিপূরক হয়ে উঠতে পারে সেই লক্ষ্যেই হয় গ্রন্থিবন্ধন।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................