আমেরিকাতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আন্দোলন হচ্ছে। সাদা আমেরিকানরা সে আন্দোলন করছে। তারা ধর্মে খ্রিস্টান। নাস্তিক। অজ্ঞেয়বাদী। ফলে তাদের এই আন্দোলনে কোন ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ নেই। আর সব মুসলমানদের মত ফিলিস্তিনিরাও আমেরিকাকে শত্রু মনে করে। তাদের ধ্বংস কামনা করে। তারা ভুলে যায় আমেরিকানরা অনেক মানবিক। মার্কিন দেশের সরকারের ভূমিকার বাইরে সে দেশের জনগণ তাদের মতামত জানাতে পারে। জর্জ হ্যারিসন বাংলাদেশের মুক্তির পক্ষে বিশাল কনসার্ট করে ডোনেশন জোগার করেছিলেন। হ্যারিসন কোন খ্রিস্টান ব্রাদারহুডে বিশ্বাস করত না। মানবতায় বিশ্বাস করত। আমেরিকা ইউরোপের মানবিকতা এরকমই জাত ধর্ম বর্ণহীন হয়ে থাকে।
আমাদের ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকার কারণ মুসলিম ব্রাদারহুড। ফিলিস্তিনের যেমন ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে থাকার কারণ ছিল মুসলিম ব্রাদারহুড। ইয়াসির আরাফাত ফিলিস্তিনি লিবারালেন জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন। আরাফাত ও ফিলিস্তিন বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে ছিলেন এমন কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় না। উল্টো ভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। আরব দেশগুলো কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে ছিল না। একা ফিলিস্তিন কি করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে থাকবে বলুন? উল্টো ১৯৭১ সালে আরব জাতীয়তাবাদী নেতা ও ম্যান্ডেটরি প্যালেস্টাইন নেতা মুহাম্মদ আমিন আল হুসাইনি বিব্রতি দিয়ে বলেন, মুসলিম দেশগুলির সবাইকে পাকিস্তানে পক্ষে থাকা উচিত...।
কোলকাতা শহরের ফিলিস্তিনিদের পক্ষে হওয়া লিবারাল-বামদের মিছিল মিটিং আর ঢাকায় হওয়া ফিলিস্তিনিদের পক্ষে হওয়া মিছিল মিটিং এক নয়। মুসলমানদের ফিলিস্তিনিদের পক্ষে থাকা ধর্মনিরপেক্ষ মানবতা থেকে নয়। পাকিস্তানী সেনাদের নৃশংসতা, বর্বরতার জবাবে ১৯৭১ সালে কোন মুসলিম দেশ থেকে ধর্মনিরপেক্ষ মানবতা উদয় হয়নি। ১৪০০ বছরে কোন মুসলিম কমিউনিটি ধর্মনিরপক্ষে মানবতা দেখায়নি। ফিলিস্তিনের জন্য মোজো কোম্পানি এক টাকা করে পাঠাবে এটা মুসলিম ব্রাদারহুড রাজনীতিকে পুঁজি করে ব্যবসা। যে মোজো খেয়ে ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করেছে সেও কোন মানবতার কারণে এটা করছে না। সে মুসলিম হিসেবে করছে। ধর্মনিরপেক্ষ মানবতা আমেরিকাতে হচ্ছে। ইউরোপে হচ্ছে। ইজরাইলকে সেটেলার বলছেন সেটা মুসলিম ব্রাদারহুড থেকে। নইলে নিজের দেশে পাহাড়ে সেটেলারদের নিয়ে নিরব থাকতেন না। নিরব থাকছেন কারণ ওরা মুসলমান নয়। পাহাড়কে মুসলমান দিয়ে ভর্তি করে ফেলাটা নিরবে সমর্থন করছেন।
আপনি ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক হলে ইজরাইলী দখলদারী নিয়ে কথা বললে জর্ডানের ফিলিস্তিনি ভূমি দখল নিয়েও কথা বলতেন। জর্ডার ১৯৫০ সালে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের স্বাধীন অংশটুকু দখল করে নেয়! আপনি একথা বাংলাদেশের কোন সংবাদ মাধ্যমে খুঁজে পাবেন না।
জর্ডানের দখলকৃত এলাকায় ফিলিস্তিনিরা ‘শরণার্থী’ হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিল আরব-ইজরায়েল যুদ্ধে। শরণার্থী ফিলিস্তিনিরা জর্ডানের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হলে এই শরণার্থী ফিলিস্তিনিদের জর্ডান রক্তক্ষয়ী এক অভিযানে উচ্ছেদ করে ১৯৭০ সালে। বলা হয় জর্ডানের হাতে ২৫ হাজার ফিলিস্তিনি তখন খতম হয়েছিল। এই অভিযানে জর্ডানের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যোগ দিয়েছিল। কেউ কি এসব ক্ষতের কথা বলে? বলে না কারণ তারা ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী নয়। তারা ফরহাদ মজহারের মত মুসলিম মানবতাবাদী। তারা দেশী সেটেলারদের চোখে দেখবে না।
©সুষুপ্ত পাঠক
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................